কাশ্মীর ইস্যুতে বিধানসভার বিরোধী দলনেতার মন্তব্যে প্রবল ক্ষুব্ধ শমীক
বর্তমান | ১২ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: কাশ্মীর প্রসঙ্গে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতার মন্তব্যে ক্রমেই অস্বস্তি বাড়ছে গেরুয়া শিবিরে। আগামী বছর রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন। সেই সময়ে বিরোধী দলনেতার এহেন মন্তব্য দলের জন্য ব্যুমেরাং হয়ে উঠবে কি না, তা নিয়েও চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ, সম্প্রতি রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ভ্রমণপিপাসু বাঙালিকে যে ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন, তার মর্মার্থ হল, কাশ্মীরের পরিবর্তে রাজ্যবাসী বরং হিমাচল প্রদেশ ঘুরতে যান। অন্যথায় প্রাণ নিয়েও টানাটানি হতে পারে। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক সাক্ষাতের পরিপ্রেক্ষিতেই উল্লিখিত ‘পরামর্শ’ দিয়েছেন তিনি। বিধানসভার বিরোধী দলনেতার এহেন মন্তব্যে দলের বিড়ম্বনা যে বেড়েছে, তা রাজ্য বিজেপির সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের কথায় স্পষ্ট।
শুক্রবার দিল্লিতে শমীকবাবু বলেন, ‘ওঁনার হয়তো হিমাচল প্রদেশ বেশি সুন্দর লাগে। তবে কাশ্মীরে পাথর ছোঁড়া বন্ধ হয়েছে। পহেলগাঁওয়ে হামলার পর একটা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল মাত্র। তিনি কোন পরিপ্রেক্ষিতে এহেন মন্তব্য করেছেন, জানি না।’ এর পরেই কিছুটা সতর্ক হয়ে শমীক ভট্টাচার্য জানান, এই বিষয়ে দলের মধ্যে কোনও মতবিরোধ নেই।
বিধানসভা ভোটে রাজ্য বিজেপির ‘মুখ্যমন্ত্রী মুখ’ কে হতে পারেন, তা নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। সম্ভাব্য ‘মুখ’ প্রসঙ্গে শমীকবাবু বলেন, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা বা দিল্লি—কোথাও মুখ করে ভোটে লড়া হয়নি। বিজেপি হারছেই, এমন কথাও বলা হচ্ছিল। কিন্তু বিজেপির ঐতিহাসিক জয় হয়েছে। মুখ ছাড়া, মুখোশ না পরেই আমরা বাংলায় ভালো ফল করতে পারব। শুক্রবার রাতে শমীকের সঙ্গে বৈঠক করেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বি এল সন্তোষ। বৈঠকের বিষয়ে অবশ্য মুখ খোলেননি শমীকবাবু। দলীয় সূত্রে খবর, নতুন রাজ্য সভাপতিকে দ্রুত ঘর গোছানোর নির্দেশ দিয়েছেন সন্তোষ। পাশাপাশি, বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে দ্রুত ‘টিম’ নিয়ে ময়দানে নামার কথাও বলেছেন তিনি।
অন্যদিকে, দিলীপ ঘোষ প্রশ্নেও বিজেপির অন্দরে ঘনাচ্ছে সংশয়। দিল্লিতে থাকলেও গত দু’দিনে দলের মাত্র দু’জন সর্বভারতীয় নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতির। বিনোদ তাওড়ে এবং শিবপ্রকাশ। বর্তমানে কারও সঙ্গেও বিজেপির বঙ্গ সংগঠনের কোনও সম্পর্ক নেই। পুরনো পরিচয়ের সূত্র ধরেই তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছেন দিলীপবাবু। ইচ্ছে করেই কি তাহলে গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক সংস্রব এড়িয়ে যাচ্ছেন দিলীপ ঘোষ? তা নিয়ে চলছে জোর চর্চা। যদিও এদিন রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় শমীকের সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেন দিলীপ ঘোষ। পাশে থাকার বার্তাও দেন তিনি। দিল্লিতে বসে তাঁর এই পোস্ট বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক মহলের।