• রাতের অন্ধকারে ব্যান্ডেল স্টেশন এলাকার দোকানপাট ভাঙল রেল, রুটিরুজি হারিয়ে হাহাকার ব্যবসায়ীদের...
    আজকাল | ১২ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: জেসিবি দিয়ে গতকাল মধ্যরাতে ব্যান্ডেল স্টেশন চত্বরের সব দোকান ভেঙে দেওয়া হয়। আগেই উচ্ছেদের নোটিশ দিয়েছিল রেল। সেই নোটিশের প্রতিবাদ করে চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার ঝাঁটা হাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন। হুমকি দিয়েছিলেন জোর করে উচ্ছেদ করলে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ আন্দোলন হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল বিনা বাধায় সব দোকান ভেঙে দিল রেল। জেসিবি চলল প্রচুর আরপিএফ এর উপস্থিতিতে।

    দশকের পর দশক ধরে ব্যান্ডেল স্টেশন এলাকায় রেলের জায়গায় দোকান চালিয়ে রুটিরুজি চালতেন পরিবারগুলো। অমৃত ভারত প্রকল্পে ব্যান্ডেল স্টেশনকে অত্যাআধুনিক করা হবে। পরিকাঠামো আমূল বদল হবে। তাই দখলদারদের উচ্ছেদ শুরু করে রেল।

    বিধায়ক অসিত মজুমদার এ প্রসঙ্গে জানান, রাতের অন্ধকারে চোরের মত কাজ করেছে রেল। মানুষ বুঝুক কতটা অমানবিক কেন্দ্রীয় সরকার। দলের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানান বিধায়ক।

    ব্য়ান্ডেল স্টেশন এলাকায় রেলের জমিতে বসবাসকারীদের পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ করা যাবে না, এই দাবিতে আন্দোলন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।

    বিজেপি নেতা সুরেশ সাউ বলেন, "বিধায়ক জানতেন তারা যেটা করছেন সেটা বেআইনি। তাই গতকাল রাতে যখন উচ্ছেদ হচ্ছে, তখন তৃণমূল নেতাদের দেখা পাওয়া যায়নি। দু'দিন ধরে ঝাঁটা হাতে নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করেছেন। ভোটের রাজনীতির জন্য ওরা এিসব করছে।"

    উচ্ছেদ হওয়া দোকানদাররা জানান, তারা ঘর ভাড়া দিতেন রেলকে ইলেকট্রিক বিল দিতেন। করোনার পর থেকে সব বন্ধ ছিল। গতকাল রাত বারোটার পর জেসিবি দিয়ে ভাঙা শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই দোকান চালিয়েই সংসার চলে। যারা দোকানে কাজ করে তাদেরও পরিবার চলে। এখন কী হবে তারা তা জানেন না।

    আরও পড়ুন-  প্রেমিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি, তাও স্বামীর ফোনে, প্রমাণ লুকোতে ছিনতাইয়ের বিরাট নাটক! তারপর কী হল?

    ব্যান্ডেল হবে অমৃত ভারত রেল স্টেশন। প্রায় ৩০০ কোটি টাকা খরচ করে ওই স্টেশন সাজানো হবে। ব্যান্ডেল স্টেশনের আশপাশে রেলের প্রচুর জায়গা জবরদখল করা রয়েছে। সেই সব দখল হঠাতে রেল নোটিস ধরাতেই অশান্তি শুরু। বৃহস্পতিবার উচ্ছেদের নোটিসের প্রতিবাদে রেলের বিরুদ্ধে মিছিল হয় ব্যান্ডেলে। 

    সেই সময়েই বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেছিলেন, "উন্নয়ন হোক, আমরাও তা চাই। তবে কোনও আলোচনা ছাড়া এ ভাবে রেল নোটিস দিয়ে দিলে কী ভাবে হবে? যা হওয়ার, তা আলোচনার মাধ্যমে হওয়া উচিত। বাড়িতে একটা ভাড়াটে থাকলে তাঁকেও তো এ ভাবে তুলে দেওয়া যায় না। তারও একটা নিয়ম আছে। এখানে যাঁরা ৩০-৪০ বছর ধরে আছেন, তাঁদেরও তো কিছু অধিকার আছে। আর এখানে যাঁরা দীর্ঘদিন ব্যবসা করছেন, একটা নোটিস দিয়ে তাঁদের তুলে দেবে? এটা অমানবিক সিদ্ধান্ত হবে।"

    এর জবাবে পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক দীপ্তিময় দত্ত বলেছিলেন, "বিধায়ক কী বলেছেন, নিজে কানে শুনিনি। তাই তার প্রতিক্রিয়া দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তবে এটাও ঠিক, স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় যাঁরা থাকেন, এটা তাঁদের স্থায়ী ঠিকানা নয়। রেলের জায়গা দখল করে থাকলে, তা তো ছাড়তেই হবে। রেলের নিরাপত্তার পাশাপাশি এ ভাবে স্টেশন সংলগ্ন জায়গা দখল করে থাকলে যাত্রীদেরও সমস্যা হয়। রেলের কাজও করা যায় না।"
  • Link to this news (আজকাল)