সুবীর দাস, কল্যাণী: নিজের ঘর থেকে তরুণীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল নদিয়ার চাকদহে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে এই ঘটনায় কার্যত স্তম্ভিত চাদুরিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের মলিচাগড় গ্রামের বাসিন্দারা। কী কারণে এমনটা ঘটল, তা নিয়ে ফিসফাস, গুনগুন চলছেই। শোনা যাচ্ছে, টাকার অভাবে পছন্দের একটি জামা কিনতে না পারায় খুব মনমরা ছিলেন স্নাতকোত্তর পাশ করা ছাত্রী। সেই কারণেই কি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত? পরিবার-প্রতিবেশীরা এনিয়েই এখন আলোচনা করছেন। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
জানা যাচ্ছে, চাকদহের চাদুরিয়া এলাকার দরিদ্র পরিবারের মেয়ে এতদিন সংগ্রাম করে পড়াশোনা করেছেন। এমএ পাশও করেছেন সেই প্রতিকূলতার পেরিয়ে। দারিদ্র ঘোচাতে এবার স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তার মাঝেই ঘটে গেল অঘটন। শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সম্ভবত গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন ওই তরুণী। বাড়ি ফিরে মা শ্যামলী সরকার মেয়েকে ওই অবস্থায় দেখে চিৎকার করে ওঠেন। ছুটে আসে প্রতিবেশীরা। তড়িঘড়ি ঝুলন্ত দেহ নামিয়ে চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শনিবার তরুণীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কল্যাণী জওহরলাল নেহরু মেমোরিয়াল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মৃতের পরিবারের সদস্যরা জানাচ্ছেন, শুক্রবার স্থানীয় একটি দোকানে তরুণীর একটি জামা পছন্দ হয়। তা কেনার জন্য মায়ের কাছে টাকা চান। কিন্তু কাছে দরিদ্র পরিবারে টাকা না থাকায় সেই জামা কিনে দেওয়া সম্ভব হয়নি। আর এর পরই শুক্রবার বিকেলে মাকে আত্মীয়ের বাড়ি পাঠিয়ে ফাঁকা ঘরে গলায় ফাঁস দেন ওই যুবতী। মা বাড়ি ফিরে এসে মেয়ের ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পান। মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে তাঁর। মেয়ে কি তবে জামা কিনতে না পেয়েই এমনটা করে ফেলল? নাকি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার নেপথ্যে অন্য কোনও গভীর যন্ত্রণা ছিল? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে।