তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের কুকথা কাণ্ডে জাতীয় মহিলা কমিশনের তলবের মুখে পড়েছিলেন বীরভূমের পুলিশ সুপার আমনদীপ। সেই মামলায় শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট বড় স্বস্তি পেলেন পুলিশ সুপার। হাইকোর্ট জানিয়ে দিল, দিল্লিতে গিয়ে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে না তাঁকে। কমিশনের সামনে ভার্চুয়ালি হাজির থাকলেই চলবে।
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ এই নির্দেশ দেন। এরফলে কমিশনের কাছে হাজিরা দিতে আর দিল্লি যেতে হবে না আমনদীপকে। আদালতে এসপি জানান, একটি মামলার তদন্তের মধ্যে অনধিকার হস্তক্ষেপ করছে জাতীয় মহিলা কমিশন। এমনকী ১৪ জুলাই তাঁকে দিল্লিতে হাজিরা দিতে বলা হয়, সঙ্গে মামলার কেস ডায়েরিও নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। এই ঘটনাটির সূত্রপাত বোলপুর থানার আইসি লিটন হালদারের অভিযোগ ঘিরে। তিনি অভিযোগ করেন, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল তাঁকে ফোন করে কুরুচিকর কথা বলেন এবং তাঁর পরিবারের মহিলা সদস্যদের সম্পর্কেও অশালীন মন্তব্য করেন।
এই ঘটনার তদন্তে শুরু থেকেই সক্রিয় হয়ে ওঠে জাতীয় মহিলা কমিশন। এর আগে দু’বার জেলা পুলিশের কাছ থেকে ‘অ্যাকশন টেকন রিপোর্ট’ চেয়েছিল তারা। কিন্তু দুই রিপোর্টেই সন্তুষ্ট হতে পারেনি কমিশন। অনুব্রতকে কেন হেফাজতে নেওয়া হয়নি তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলে কমিশন। তবে, পুলিশ প্রশাসনের তরফে সাফ জানানো হয়েছিল, অনুব্রত মণ্ডল তদন্তে সহযোগিতা করছেন এবং তাই তাঁকে হেফাজতে নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। কমিশনের সেই ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট না হয়ে আরও সরাসরি জবাবদিহি চেয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। এরপরেই পুলিশ সুপারকে সরাসরি দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। পুলিশ সুপারের মতে, তদন্ত যখন প্রাথমিক স্তরে রয়েছে, তখন কমিশনের এই তলব কার্যত তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই সেই নির্দেশের বিরোধিতা করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এসপি আমনদীপ। কমিশনের এই তলবের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পুলিশ সুপার। শেষমেশ পুলিশ সুপার কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন করেন। আদালতের নির্দেশে সাফ বলা হয়েছে, কমিশনের তলবের জবাবে আমনদীপ ভার্চুয়ালি অংশ নিতে পারবেন। ফলে এই মুহূর্তে দিল্লি যাওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না তাঁর। উল্লেখ্য, এই গোটা বিতর্কে অনুব্রত মণ্ডল পরে তৃণমূল নেতৃত্বকে লেখা এক চিঠিতে দুঃখ প্রকাশ করে জানান, ওষুধ খাওয়ার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মাথা গরম হয়ে এমন কথা বলেছিলেন। তবে তিনি এ-ও প্রশ্ন তোলেন, সেই অডিয়ো ফাঁসই বা হল কীভাবে?