২০ দিনে ডুবে মৃত্যু ৬ জনের! বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও বাঁকুড়ার জলযন্ত্রণা কমছে না, উদ্বেগে স্থানীয়েরা
আনন্দবাজার | ১২ জুলাই ২০২৫
বৃষ্টি কমেছে। কিন্তু জলযন্ত্রণার ছবির বদল হচ্ছে না বাঁকুড়ায়। এমনিতেই দ্বারকেশ্বর নদের একাধিক কজ়ওয়ে এখনও জলের তলায়। তার উপর জাঁতাডুমুর জলাধার থেকে ছাড়া জলে নতুন করে ডুবল ভৈরোবাঁকি নদীর উপর থাকা কাঁটাপাল কজ়ওয়ে। দ্বারকেশ্বরে ডুবে আরও এক মৃত্যুর খবর এসেছে শনিবার। বিষ্ণুপুর থানার অবন্তিকা গ্রামের কাছে নদে ডুবে মৃত্যু হয়েছে ২৬ বছরের সঞ্জয় বাগদির। এই নিয়ে গত ২০ দিনে দ্বারকেশ্বরের জলে ডুবে বাঁকুড়ায় মৃত্যু হল ছ’জনের। যাদের মধ্যে চার জন স্কুলপড়ুয়া।
সঞ্জয়ের বাড়ি ওন্দা থানার মালপুর গ্রামে। তবে বিষ্ণুপুর থানার ভাটরা গ্রামে থাকতেন। ঘটনাস্থলের অদূরে থাকা সেতুর গার্ডওয়ালের একটি জায়গায় রক্ত ও আঁচড়ের দাগ দেখে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, ওই যুবক সেতুর গার্ডওয়াল টপকে কোনও কারণে দ্বারকেশ্বরে নামার চেষ্টা করেছিলেন। সেই সময় টাল সামলাতে না-পেরে তিনি জলে পড়ে যান। তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বাঁকুড়া জেলায় ভারী বৃষ্টি হয়নি। তাই ধীরে ধীরে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। সবক’টি নদীর জলস্তর কমছে। কিন্তু শনিবারও জলযন্ত্রণা একই রয়েছে। মীনাপুর, কেঞ্জাকুড়া ও ভাদুল কজ়ওয়ে এখনও ডুবে আছে। তাই সেখান দিয়ে যাতায়াত করতে পারছেন না বাসিন্দারা। দ্বারকেশ্বর নদের দুই পারের বাসিন্দারা এখনও দুর্ভোগ পোয়াচ্ছেন। অন্য দিকে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নতুন করে চিন্তা বাড়িয়েছে ভৈরোবাঁকি নদীর উপর জাঁতাডুমুর জলাধার থেকে ছাড়া জল। শনিবার সকাল থেকে জলাধারের জলের জন্য ভেসেছে কাঁটাপাল কজ়ওয়ে। ফলে বাঁকুড়ার ফুলকুসমা থেকে ঝাড়গ্রামের বিনপুর যাতায়াতে অসুবিধা সৃষ্টি হয়েছে। বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম রাজ্যসড়কের বিকল্প হিসাবে এই রাস্তাটা নিত্যদিন ব্যবহার করেন অসংখ্য মানুষ। কাঁটাপাল সেতু জলমগ্ন হয়ে পড়ায় সেখান দিয়ে যান চলাচল তো দূরের কথা, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় হেঁটেও পারাপার করছেন না স্থানীয়েরা।
সেচ দফতর জানাচ্ছে, রানিবাঁধ ব্লকে ভৈরোবাঁকি নদীর উপর থাকা জাঁতাডুমুর জলাধারে জলধারণের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ৩৮৬ ফুট। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানকার জলস্তর ৩৮১ ফুট উচ্চতা অতিক্রম করায় আগাম সতর্ক হয়ে জল ছাড়া শুরু হয়। এখন ১৫০০ কিউসেক হারে জল ছাড়া শুরু করে সেচ দফতর।