তরাই, ডুয়ার্সে কমলেও জুন মাসে চা পাতার উৎপাদন বৃদ্ধি পাহাড়ে
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: তরাই, ডুয়ার্সে কমলেও গতবারের তুলনায় এবার জুন মাসে পাহাড়ে চা পাতার উৎপাদন বাড়ল। টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্টে এমনটাই উঠে এসেছে। ওই রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র জুনে ডুয়ার্সে গত বছরের তুলনায় কাঁচা চা পাতার উৎপাদন কমেছে ৬ লক্ষ ৬৫ হাজার ৪৫৬ কেজি। গত বছরের নিরিখে তরাইয়ে এবার জুনে চা পাতার উৎপাদন ১ লক্ষ ৬ হাজার ৫৫ কেজি কম হয়েছে। যদিও পাহাড়ে গত বছরের তুলনায় এবার জুন মাসে চা পাতার উৎপাদন বেড়েছে ১ লক্ষ ৭ হাজার ৪৫৫ কেজি।
ডুয়ার্সের নাগরাকাটায় অবস্থিত টি রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের রিপোর্ট বলছে, গত বছর জুনে ডুয়ার্সে মোট চা পাতা উৎপাদন হয়েছিল ৬৪ লক্ষ ৮৪ হাজার ৬১৮ কেজি। এবার জুনে উৎপাদন হয়েছে ৫৮ লক্ষ ১৯ হাজার ১৬২ কেজি।
তরাইয়ে গতবার জুনে মোট চা পাতা উৎপাদন হয়েছিল ১৬ লক্ষ ২৬ হাজার ৪৪১ কেজি। এবার জুনে হয়েছে ১৫ লক্ষ ২০ হাজার ৩৮৬ কেজি। পাহাড়ের ক্ষেত্রে ছবিটা অবশ্য একটু অন্যরকম। সেখানে একমাত্র কালিম্পং বাদে সর্বত্র গতবারের তুলনায় এবার জুনে চা পাতার উৎপাদন বেড়েছে। গতবার জুন মাসে পাহাড়ে চা পাতা উৎপাদন হয়েছিল ৩ লক্ষ ৭৭ হাজার ৭৮৬ কেজি। এবার জুনে সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৪ লক্ষ ৮৫ হাজার ২৪১ কেজি।
টিআরএ’র রিপোর্টে এবারের জুনে উত্তরবঙ্গের চা বলয়ে বৃষ্টির ঘাটতি এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধির গ্রাফও উঠে এসেছে। দেখা যাচ্ছে, ডুয়ার্সে গতবছর জুনে বৃষ্টিপাত হয়েছিল ১২১৪ মিমি। এবার জুনে ডুয়ার্সে বৃষ্টি হয়েছে ৫০৫ মিমি। গতবার জুনে ডুয়ার্সে যেখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৭ ডিগ্রি, সেখানে এবার তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৬.৯ ডিগ্রি। তরাইয়ে গতবার জুনে বৃষ্টিপাত হয়েছিল ৬৯৪ মিমি। এবার জুনে তরাইয়ে বৃষ্টি হয়েছে ৩২৯ মিমি। গত বছর জুনে তরাইয়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৫ ডিগ্রি। এবার তা বেড়ে হয় ৩৩.৫ ডিগ্রি।
গতবার জুনে পাহাড়ে বৃষ্টি হয়েছিল ৬৬৭ মিমি। মাসে ২৩ দিন বৃষ্টি হয়। এবার জুনে পাহাড়ে বৃষ্টি হয়েছে ৩৮৩ মিমি। ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের তরাই শাখার সচিব রানা দে বলেন, এমনিতেই বৃষ্টি কম। তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে চা বাগানে পাতার উৎপাদন মার খেয়েছে। তার উপর রোগপোকার আক্রমণে পাতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জুন মাস থেকেই রেন ফ্ল্যাশের চা পাতা পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা অমৃতাংশু চক্রবর্তী বলেন, চা পাতার উৎপাদন থেকে তৈরি করা চা নিলামে বিক্রি, সবটাই খুব খারাপ অবস্থার মধ্যে রয়েছে। এমনটা চললে অনেক বাগান বন্ধ হয়ে যাবে।