হস্তক্ষেপ মুখ্যমন্ত্রীর, মহারাজার মূর্তি বসানো নিয়ে এনবিডিডি-পুরসভার মধ্যে দ্বন্দ্ব মিটল
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করতে হল মুখ্যমন্ত্রীকে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে কোচবিহারে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের অফিসের সামনেই বসছে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ ভূপবাহাদুরের মূর্তি। কোচবিহার পুরসভা ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের দ্বন্দ্ব মিটিয়ে ফের শুরু হচ্ছে মহারাজার মূর্তি স্থাপনের কাজ।
‘রাজনগর’ কোচবিহারে মহারাজা জগদ্দীপেন্দ্রনারায়ণ ভূপবাহাদুরের মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুরসভা। শহরের আমতলা মোড়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের অফিসের সামনে রাস্তার ধারে সেই মূর্তি বসানোকে কেন্দ্র করে টানাপোড়ন শুরু হয় পুরসভা ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের। এনবিডিডি’র নির্দেশে শুক্রবার বিকেলে সেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দপ্তরের সামনে মূর্তি বসানোর জন্য কাজ শুরু করলেও পুরসভা আগাম কিছুই জানায়নি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে। তবে পুরসভার দাবি, স্থানটি পুরসভার অধীনে। তাই কারও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল শুক্রবার। আর শনিবার দুপুরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়নগুহ যখন এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করছেন, ঠিক সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর ফোন আসে তাঁর কাছে। মুখ্যমন্ত্রী সম্পূর্ণ বিষয়টি শোনেন মন্ত্রীর কাছ থেকে। উদয়নবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন। জেলাশাসক অরবিন্দকুমার মিনা, মহকুমা শাসক কুণাল বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে আনা হয়। তবে, পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সেই সময় অন্যত্র ব্যস্ত থাকায় তিনি আসতে পারেননি। তখন উদয়ন ফোন করেন রবীন্দ্রনাথকে। পরে বাইরে কোন জায়গায় মূর্তি বসানো যায়, উদয়ন তাও দেখিয়ে উপস্থিত সকলকে।
উদয়ন বলেন, আপনাদের সামনেই মুখ্যমন্ত্রী ফোন করেছিলেন। তিনি চান মূর্তি এমন ভাবে বসানো হোক, যাতে সকলে শ্রদ্ধা জানাতে পারেন। তিনি উদ্যান করার কথাও বলেন। তেমনটা করতে হলে আমাদের খানিকটা ভিতরের দিকে ঢুকতে হবে। ফেন্সিং খুলে একটু পিছনের দিকে মূর্তি বসিয়ে, সামনে ছোট উদ্যানের মতো করে দেব। পুরসভা সেটা করলে ভালো। না হলে আমার দপ্তর থেকে করা হবে।
জেলাশাসক বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথা অনুসারে পুরসভার সঙ্গে কথা বলে সসম্মানে মূর্তি বসানো হবে।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি তথা ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার অভিজিৎ দে ভৌমিকের কথায়, কোচবিহার পুরসভার বোর্ড মিটিং-এ সিদ্ধান্ত হয়েছিল মহারাজার মূর্তি বসানো হবে। তার জন্যই খোঁড়াখুড়ি হচ্ছিল। কিন্তু দপ্তরের অফিসাররা জানতেন না। পুরসভার চেয়ারম্যান আসার পর জানা যায় সেখানে মূর্তি বসবে।
কাজ বন্ধের নির্দেশ আসার পর থেকেই জেলাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। এদিন সকালেও কোচবিহার নাগরিক মঞ্চের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, মহারাজার মূর্তি বসবে। পুরসভার ঠিক করা জায়গাতেই বসানো হবে। নিজস্ব চিত্র।