• মন্তেশ্বরের নেতার দাপটে ত্রস্ত বাসিন্দারা, কুসুমগ্রামে ফাঁড়ির দাবি মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লার
    বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বর্ধমান: এক নেতা মন্তেশ্বরে সমান্তরাল প্রশাসন চালানোর চেষ্টা করছেন। তাঁর অত্যাচারে এলাকার বাসিন্দারা ত্রস্ত হয়ে রয়েছেন। ওই নেতার অত্যাচার বন্ধ করতে কুসুমগ্রামে পুলিস ফাঁড়ি করা দরকার বলে সাংবাদিক বৈঠক করে দাবি করলেন বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা তথা মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। শনিবার তিনি সাতগেছিয়ায় বিধায়ক কার্যালয়ে বসে মেমারি-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে অনাস্থা আনার ইঙ্গিতও দিয়েছেন তিনি। ১৬জন সদস্য-সদস্যা ইতিমধ্যে সই করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন। 

    তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, মেমারি-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে দীর্ঘদিন ধরেই শাসকদলের টানাপোড়েন চলছে। সভাপতি এবং সহ সভাপতির লড়াই তুঙ্গে উঠেছে। তার জেরে কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে। কর্মীদের দাবি, দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে বিবাদমান দুই নেতা এবং নেত্রীকে সরিয়ে নতুন মুখ আনা দরকার। দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না টুডু কয়েকদিন আগেই টাকার বিনিময়ে পদ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। তাঁর তির ছিল মন্ত্রীর দিকে। তিনি পঞ্চায়েত অফিসে বসে কয়েকদিন আগে বলেন, আমার বিরুদ্ধে কী অত্যাচার হয়েছে আপনারা দেখেছেন। মন্ত্রী অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়েছেন।

    এদিন সিদ্দিকুল্লা মন্তেশ্বরের নেতা আহমেদ হোসেনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, মন্তেশ্বরে গুন্ডা বাহিনী, বাইক বাহিনী এলাকায় ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছে। দলকে সামনে রেখে ওই নেতা আখের গোছাচ্ছেন। জমি বিক্রি করতে হলে টাকা দিতে হয়। ভাইয়ে ভাইয়ে গণ্ডগোল হলে ফায়দা তোলেন। 

    এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে আহমেদ হোসেনকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। তবে কয়েকদিন আগে তিনি মন্ত্রীর বিরুদ্ধেই একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি সেদিন বলেন, ওঁর প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ রয়েছে। সেই কারণেই তাঁকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল। 

    তৃণমূল কর্মীরা বলছেন, মন্তেশ্বরের মতো মেমারি-২ ব্লকেও এক উঠতি নেতা নিজেকে বেতাজ বাদশা ভাবতে শুরু করেছেন। মন্তেশ্বরের ভাইজান যে কায়দায় চলেন তিনিও সেভাবে হাঁটছেন। নিজস্ব বাহিনী তৈরি করে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। সব কিছুতেই মাথা ঘামিয়ে তিনি ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। রাতারাতি তাঁর আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে উঠেছে। তিনি নিজের এলাকা ছেড়ে বর্ধমানে থাকতে বেশি পছন্দ করেন। কখনও নবাবহাটের উপনগরী আবার কখনও শহরে অন্য প্রান্তে তিনি থাকেন। দলের অনেকেই বলছেন, শুধু মন্তেশ্বর নয়, মেমারির ছোট ভাইজানেরও লাগাম টানা দরকার। তা না হলে তিনিও বেতাজ বাদশা হয়ে উঠবেন। তখন তাঁর অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে বড়পলাশন এলাকাতেও পুলিস ফাঁড়ি করার দাবি উঠবে।  
  • Link to this news (বর্তমান)