শ্রীকান্ত পড়্যা, তমলুক: শনিবার নাটকীয় পরিস্থিতিতে তমলুক টাউন কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটির বোর্ড গঠন হল। দলের পাঠানো প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করেন অধিকাংশ ডিরেক্টর। তাঁরা ভোটাভুটির মাধ্যমে বোর্ড গঠন করতে রাজি বলে সাফ জানান। এই পরিস্থিতিতে ভোটাভুটির মাধ্যমে এদিন ওই সমবায়ের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও সেক্রেটারি নির্বাচন হয়। সোসাইটির চেয়ারম্যান হয়েছেন বিশ্বনাথ মহাপাত্র। ভাইস চেয়ারম্যান হন লীনা মাভৈ রায়। সেক্রেটারি হয়েছেন রণেন্দ্রনাথ মালাকার, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি হয়েছেন দিলীপকুমার মাইতি। ট্রেজারার হয়েছেন রত্নেশ্বরী পট্টনায়েক।
এদিন বিকেল ৩টে নাগাদ বোর্ড গঠনের সভা ছিল। সভায় বোর্ডের পদাধিকারীদের নাম মুখবন্ধ খামে আনা হয়। ওই সোসাইটির ডিরেক্টর তথা শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া দলের অনুমোদিত পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করেন। চেয়ারম্যান হিসেবে প্রাক্তন সরকারি পিপি আব্দুল মোহিত, ভাইস চেয়ারপার্সন রত্নেশ্বরী পট্টনায়েক, সেক্রেটারি হিসেবে প্রাক্তন কাউন্সিলার চন্দন প্রধানের নাম ঘোষণা করা হয়। অধিকাংশ ডিরেক্টর ওই প্যানেলে আপত্তি জানান। তাঁরা ভোটাভুটিতে যেতে চান বলে সাফ জানান। এরপরই ভোটাভুটি হয়। চঞ্চল খাঁড়া, চন্দন প্রধানরা ভোটাভুটি বয়কট করে বেরিয়ে যান।
ডেলিগেট নির্বাচন থেকে ডিরেক্টর নির্বাচন পর্যন্ত ওই সমবায়ে প্রার্থী নিয়ে বিস্তর ঝামেলা হয়েছে। ডিরেক্টর নির্বাচনে রাজ্যের পাঠানো প্যানেল অনুযায়ী মনোনয়ন জমা করার পর ফের সেই প্যানেল রদবদল করা হয়। মনোনয়ন জমা করেও প্রার্থীপদ থেকে সরে দাঁড়াতে হয় মনোজকুমার হালদারকে। তাঁর জায়গায় ডিরেক্টর হন শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া। সেই চঞ্চলবাবুর পছন্দের ব্যক্তিদের বোর্ডের শীর্ষপদে রেখে প্যানেল তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ। যেকারণে সেই প্যানেলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে সংখ্যাগরিষ্ঠ ডিরেক্টর নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী বোর্ড গঠন করেছেন।
এরআগে কন্টাই কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার ব্যাঙ্কেও ডিরেক্টর নির্বাচনে রাজ্যের পাঠানো প্যানেলকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থী হয়েছিলেন কাঁথি-৩ ব্লক তৃণমূল সভাপতি নন্দদুলাল মাইতি। সেই ভোটে তিনি জয়ী হন। রাজ্য থেকে দলের পাঠানো প্যানেলের প্রার্থী পরাস্ত হন। দলীয় সূত্রে খবর, অনেক সময় সমবায়ের দায়িত্বে থাকা রাজ্য নেতৃত্ব নাম চাপিয়ে দিচ্ছে। কোনও গোষ্ঠীকে খুশি করতে গিয়ে এমনটা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তমলুক টাউন কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটিতে একটি গোষ্ঠীর ডিরেক্টরদের সভাপতি ও সেক্রেটারি পদে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। এর বিরুদ্ধেই ভোটাভুটি হয় এবং অফিসিয়াল প্যানেল খারিজ হয়ে যায়। শহর তৃণমূল সভাপতি চঞ্চল খাঁড়া বলেন, দলের নির্দেশ অমান্য করে পুরসভার চেয়ারম্যান এবং ভাইস চেয়ারপার্সন ভোটাভুটির মাধ্যমে বোর্ড গঠনে রাজি হন। এর মাধ্যমে তাঁরা দলীয় সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানালেন। আমরা চারজন এই ভোটাভুটি বয়কট করেছি। পুরসভার চেয়ারম্যান তথা ডিরেক্টর দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় বলেন, সিংহভাগ ডিরেক্টর ভোটাভুটির মাধ্যমে বোর্ড গঠনে সায় দেন। সেই পথে গণতান্ত্রিক উপায়ে বোর্ড গঠন হয়েছে।