কান্দিতে ‘দাদা’র প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে মারধর
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, কান্দি: এবার কান্দির রাজা বীরেন্দ্র চন্দ্র ল’কলেজে ‘দাদা’দের মাতব্বরিতে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ‘দাদা’র প্রেম প্রস্তাবে সাড়া দেননি। তারজন্য তাঁকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে ‘দাদা’র সহপাঠীদের বিরুদ্ধে। শুক্রবার এনিয়ে ওই ছাত্রী কান্দি থানায় ছ’জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিস জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে।
নির্যাতিতা ছাত্রীর অভিযোগ, গত ৮ জুলাই তিনি কলেজে গিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁকে ও তাঁর এক বান্ধবীকে কলেজ থেকে বেরিয়ে একটি ক্যাফেতে দেখা করতে বলেছিল তৃতীয় বর্ষের ‘দাদা’। কিন্তু, সেই প্রস্তাব সঙ্গে সঙ্গে তিনি নাকচ করে দেন। জবাবে তাঁদের দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এরপর গত শুক্রবার একজন বহিরাগতকে এনে ‘দাদা’রা কলেজের একটি রুমে আমাদের ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। সেখানে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়।
কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে কলেজ চত্বরে তৃতীয় বর্ষের পাঁচ ছাত্র ও এক ছাত্রী মিলে দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে প্রচণ্ড মারধর করে। কলেজের দু’জন অশিক্ষক কর্মী ও কয়েকজন ছাত্রছাত্রী তাদের থামায়। অসুস্থ হয়ে পড়ায় নির্যাতনের শিকার দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার কিছুক্ষণ পরই হাসপাতালে ভর্তি হয় মারধরে অভিযুক্ত তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীও। খবর পেয়ে হাসপাতালে যান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সুচিস্মিতা নাগ।
নির্যাতিতা দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী বলেন, শুক্রবার কলেজে ফর্ম ফিলআপ করতে এসেছিলাম। আমি অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে বান্ধবীকে টাকা নিয়ে আসার জন্য বাইরে যেতে বলি। কিন্তু, ওর আসতে দেরি হচ্ছে দেখে আমি বেরিয়েছিলাম। সেই সময় কলেজের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্র আমাকে ধাক্কা মারে। প্রতিবাদ করলে পরিবার তুলে গালিগালাজ করে। এরপর সকলে মিলে আমাকে মারধর করে। গলা টিপে ধরা হয়। মুখ চিরে দেওয়া হয়। এরপর টানতে টানতে কলেজের মাঠের দিকে নিয়ে গিয়ে মাটিতে ফেলে বুকে পেটে আঘাত করা হয়। আমাকে মারধরের কারণ, আমি ওই তৃতীয় বর্ষের ‘দাদা’র প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দিইনি। আমার বান্ধবীকে মোবাইলে মেসেজ করে জানিয়েছিল প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হলে আমার ক্ষতি করবে।
যদিও মারধরে অভিযুক্ত তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী বলেন, আগে ওই মেয়েটি আমার বাবা-মা ও পরিবার তুলে গালি দিয়েছিল। যেটা অধ্যক্ষকে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম। মেয়েটি নিজেই পোশাক খুলে ফাঁসিয়ে দেবে বলে হুমকি দিয়েছিল। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, মারামারির ঘটনা কলেজের ভিতরে হয়নি। তবে পুলিসকে তদন্তে সহযোগিতা করা হচ্ছে। কলেজের অধ্যক্ষ এখন ছুটিতে রয়েছেন। তিনি ফেরার পর সিদ্ধান্ত নেবেন। পুলিস জানিয়েছে, তদন্ত করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের ধরার চেষ্টা চলছে।