হিংলো নদীর করাল গ্রাসে দুবরাজপুরের দু’টি বাড়ি, গাছতলায় ঠাঁই পরিবারের
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: টানা বৃষ্টি বন্ধ হয়েছে। তবে, হিংলো ড্যাম থেকে এখনও অবিরাম জল ছাড়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে হিংলো নদীর দু’ধারে ভাঙন শুরু হয়েছে। দুবরাজপুর ব্লকের লোবা পঞ্চায়েত এলাকার পলাশডাঙা ও দেবীচরের পৃথক দু’টি বাড়ি তলিয়ে যায়। আরও বেশকিছু বাড়ি ভাঙনের মুখে রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে হিংলো নদীর দু’ধারের বাসিন্দারা সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন। আতঙ্কে গ্রামবাসীদের ঘুম উড়েছে। স্থানীয় প্রশাসনও চিন্তিত। দুর্ঘটনা এড়াতে নিয়মিত গ্রামবাসীদের সতর্ক করার কাজ চলছে।
বিডিও রাজা আদক বলেন, ওই দু’টি বাড়ি নদীর পাড়েই ছিল। বাড়ির মালিকদের আগেই সতর্ক করা হয়েছিল। তাঁরা সতর্ক না হওয়ায় দু’টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সরকারিভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, ভাঙনের জেরে নদীর ক্রমশ গ্রামের দিকে ঢুকে পড়ছে। এই পরিস্থিতিতে পলাশডাঙা সহ দেবীচরের বাসিন্দাদের রাতের ঘুম উড়েছে। ভাঙনের জেরে গৃহহারা দুই পরিবার বর্তমানে গাছ তলায় ঠাঁই নিয়েছে। সেখানেই ত্রাণের ত্রিপল টাঙিয়ে পরিবার নিয়ে রাত কাটানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। গ্রামের অন্যান্য বাসিন্দারাও ভাঙনের জেরে ভয়ে সিটিয়ে রয়েছেন। তবে, টানা বৃষ্টিতে সাময়িক ইতি পড়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি এসেছে।
পলাশডাঙার বাসিন্দা লক্ষণ অঙ্কুর বলেন, নদী ভাঙনের জেরে ঘর পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশকিছু সামগ্রীও জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে গাছ তলায় ঠাঁই নিয়েছি। বর্ষার মরশুমে কী করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের তরফে সহযোগিতা পেলে ভালো হয়। দেবীচরের বাসিন্দা সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, দু’টো ঘর ভেসে গিয়েছে। একটি ঘর তলিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ত্রিপল টাঙিয়ে থাকছি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে খুবই সমস্যায় রয়েছি।
স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান সুরজিৎ সুত্রধর বলেন, ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতির উপর নজর রাখার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত দু’টি পরিবারের সদস্যদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়েছে। তবে, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে আমরা যথেষ্টই চিন্তিত।