কোলাঘাটে তৃণাঙ্কুরের উপস্থিতিতে টিএমসিপির সভায় গরহাজির বহু ছাত্রনেতা, শুরু দীর্ঘক্ষণ পর
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: কসবা ল’কলেজের ঘটনার পরই ক্যাম্পাসে ‘দাদাগিরি’ ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে। এই পরিস্থিতিতে শনিবার কোলাঘাটের বড়দাবাড়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভায় অনেক কলেজের ছাত্রনেতারা উপস্থিত হলেন না। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে ওই সভায় জেলা পদাধিকারীরাও গরহাজির রইলেন। সকাল ১০টায় ওই সভার ডাক দেওয়া হয়েছিল। ছাত্রনেতাদের গরহাজিরায় নির্ধারিত সময়ের আড়াই ঘণ্টা দেরিতে বেলা সাড়ে ১২টায় সভা শুরু হয়। তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল ও হাওড়া গ্রামীণ সাংগঠনিক জেলার ছাত্র নেতাদের নিয়ে এদিন মিটিং ছিল। সেখানে পূর্ব মেদিনীপুর জেলারই আট-দশটি কলেজ থেকে ছাত্র ইউনিটের নেতারা উপস্থিত হলেন না।
২১জুলাই শহিদ সভাকে সামনে রেখে শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ প্রস্তুতি বৈঠক ডেকেছিল। কোলাঘাটে একটি হোটেলে ওই সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর। অথচ সেই সভায় যাননি তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি অতনু সামন্ত, কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি শৈবাল সাউ। এছাড়া কাঁথি প্রভাতকুমার কলেজ, দেশপ্রাণ কলেজ, এগরা সারদা শশীভূষণ মহাবিদ্যালয়, যোগদা সৎসঙ্গ পালপাড়া কলেজ, মাতঙ্গিনী মহিলা মহাবিদ্যালয়, বাজকুল মিলনী মহাবিদ্যালয় সহ অনেক কলেজ ইউনিটের নেতৃত্ব যায়নি। এমনকী, কোলাঘাটের রবীন্দ্রভারতী মহাবিদ্যালয়ের ইউনিট সভাপতি শেখ সুরজ সহ ছাত্রনেতারা ওই সভায় যাননি।
টিএমসিপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি অতনু বলেন, এদিনের সভায় ডাক আসেনি। তাই কোলাঘাটের সভায় আমি যাইনি। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি শৈবাল বলেন, কিছু সমস্যার কারণে যেতে পারিনি। কোলাঘাট রবীন্দ্রভারতী মহাবিদ্যালয়ের ইউনিট সভাপতি শেখ সুরজ বলেন, এদিন সংগঠনের সভা সম্পর্কে ঠিকমতো খবর ছিল না। অনেক দেরিতে জেনেছি। তাই যাওয়া হয়নি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় টিএমসিপি এই মুহূর্তে আড়াআড়িভাবে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে। তৃণাঙ্কুর বিরোধী একটি বড় গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। ঘটনাচক্রে সেই গোষ্ঠীই এখন জেলার বেশিরভাগ কলেজের ছাত্র ইউনিটের দায়িত্বে রয়েছে। যেকারণে জেলায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মধ্যে প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। যদিও কলেজ ক্যাম্পাসে দাদাগিরির অভিযোগ রয়েছে দুই শিবিরের দিকেই।
এদিন তৃণাঙ্কুর ছাত্র নেতাদের উদ্দেশে বলেন, রাজনীতিতে সবাই আমার কাছের হবেন এমনটা মোটেও নয়। কিন্তু, সংগঠনের কত কম সংখ্যক সদস্যা আমাদের বিপক্ষে যাচ্ছেন তার উপর একজনের নেতৃত্বের গুণ নির্ভর করে। সবকিছু নিজের মনমতো হতে পারে না। আমার সকল জেলা সভাপতি একশো শতাংশ সমান নন। কিন্তু, নেতার দায়িত্ব সকলকে নিয়ে চলা। সেটা সবসময় নিজের পক্ষে নাও হতে পারে।
তবে, তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি প্রসেনজিৎ দে বলেন, প্রতিটি কলেজ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। কোথাও ইউনিট প্রেসিডেন্ট না এলেও প্রতিনিধি ছিলেন।