• সোনার দোকানে চেক জমার জাল নথি দেখিয়ে প্রতারণা বউবাজারে, গ্রেপ্তার
    বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বউবাজারের একটি অলঙ্কার বিপণি থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকার সোনা-রুপো হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে লালবাজারের ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখা। ধৃতের নাম বিজয়ান্তকুমার সিং। বাড়ি ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে। তবে এখানেই শেষ নয়! তাঁকে জেরা করে যে তথ্য মিলেছে, তাতে রীতিমতো হতবাক ঝানু গোয়েন্দারাও। তাঁরা জেনেছেন, টাকা জমা দেওয়ার জাল নথি দেখিয়ে হাতানো সোনা তিনি একটি ঋণদানকারী সংস্থায় বন্ধক রেখে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে নিয়েছেন। প্রতারণার এমন অভিনব কৌশল নিয়ে এক গোয়েন্দাকর্তার সরস মন্তব্য, ‘এ তো দেখছি, এক ঢিলে দুই পাখি মারার আদর্শ উদাহরণ!’ ইতিমধ্যে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিস সোনার হার, রিস্টলেট এবং ১০০ গ্রাম রুপোর কয়েন উদ্ধার করেছে। শনিবার কলকাতা পুলিসের গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার এই খবর জানিয়েছেন।

    ঘটনা হল, চলতি মাসের ৩ তারিখে অভিযুক্ত বিজয়ান্তকুমার একজন ক্রেতা সেজে বউবাজারের ওই সোনার গয়নার শোরুমে আসেন। সেখানে ঘণ্টাখানেক ধরে তিনি বিভিন্ন গয়না পছন্দ করেন। পছন্দের ভিত্তিতে কিছু গয়না আলাদা করে রেখে যান। বলে যান, এক-দু’দিনের মধ্যে তিনি সেগুলি নিয়ে যাবেন। এরপর ৬ জুলাই বিজয়ান্তকুমার নিজে ওই দোকানে না এসে ম্যানেজারকে ফোন করেন। ফোনে তিনি ম্যানেজারকে তাঁর পছন্দ করে রেখে যাওয়া গয়নাগুলির ছবি পাঠাতে বলেন। ছবি পাঠানো হলে তিনি ম্যানেজারকে আশ্বস্ত করেন, চেকের মাধ্যমে দাম মিটিয়ে গয়নাগুলি তিনি নিয়ে আসবেন শীঘ্রই। এরপর ৮ জুলাই শোরুমে হাজির হন বিজয়ান্তকুমার। তিনি ম্যানেজারকে একটি নথি দেখিয়ে বলেন, দোকানের নামে তিনি ইতিমধ্যে চেক জমা করে দিয়েছেন। বিকেলের মধ্যে সেই চেক ‘ক্লিয়ার’ হয়ে যাবে। তাঁর কথাতেই বিশ্বাস করে বসেন শোরুমের ম্যানেজার। এরপর বাছাই করা গয়না নিয়ে তিনি শোরুম থেকে বেরিয়ে যান। পরদিন দেখা যায়, ওই চেক ‘ক্লিয়ার’ হওয়ার বদলে ‘বাউন্স’ করেছে! মাথায় হাত পড়ে শোরুমের কর্তাদের। ফোনে ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে গিয়ে দেখা যায়, সেটি সুইচড অফ। তড়িঘড়ি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় স্থানীয় মুচিপাড়া থানায়। অভিযোগের  গুরুত্ব অনুধাবন করে তদন্তভার তুলে দেওয়া হয় ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার  হাতে। তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইলের সূত্র ধরে পার্ক সার্কাস এলাকার এক হোটেল থেকে শুক্রবার রাতে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। শুধু বউবাজার নয়, কলকাতার আরও কয়েকটি শোরুমে ধৃত একই কায়দায় প্রতারণার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ। তবে সফল হতে পারেননি। শনিবার ধৃতকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী রাধানাথ রং জানিয়েছেন, তাঁকে আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। 
  • Link to this news (বর্তমান)