অর্পণ সেনগুপ্ত, কলকাতা: ভারতীয় ফুটবলের জনক বলা হয় নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারীকে। তিনি হেয়ার স্কুলের মাঠে চামড়ার বলে লাথি মেরে বিলিতি খেলাটিকে ভারতীয়দের জন্য চালু করেছিলেন। সেই হেয়ার স্কুলই দু’বছর স্কুল পর্যায়ের সর্বভারতীয় টুর্নামেন্ট সুব্রত কাপের কোয়ালিফায়ারে অংশ নিতে পারছে না। বৃহস্পতিবার রাজ্য স্তরে প্রাক সুব্রত কাপের ফাইনাল শেষ হয়েছে। অনূর্ধ্ব ১৭ বয়স স্তরে ছেলেদের বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কলকাতার চৌবাগা স্কুল। তারপর অনেকের বক্তব্য, কলকাতার স্কুলে যে ভালো মানের ফুটবলার মিলছে না তা তো নয়। চৌবাগা তার হাতেগরম প্রমাণ। অথচ এই শহরের যে স্কুলটি সারা দেশে ফুটবল ছড়িয়ে দিয়েছিল, তারাই এখন নাম দিতে পারছে না! অবশ্য হেয়ার একা নয়, একই পরিস্থিতি আর একটি ঐতিহ্যবাহী স্কুল, হিন্দুরও।
হেয়ার স্কুলের প্রধান শিক্ষক তপন মাইতি বলেন, ‘আমাদের একজন মাত্র গেম টিচার রয়েছেন। শিক্ষকের অভাবে তাঁকে অন্যান্য বিষয়ের ক্লাসও নিতে হয়। তাছাড়া কোভিড পরবর্তী সময় ছাত্রদের স্কুলে টেনে আনতে নানা ধরনের পরিকল্পনা করতে হচ্ছে। তা সত্ত্বেও এ বছর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তবে ছাত্রদের মধ্য থেকে সেই পর্যায়ের ফুটবলার তুলে আনতে যা যা করতে হয়, তা করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ছাত্রদের মধ্যেও উৎসাহের অভাবও দেখা গিয়েছে।’ তবে ছাত্রদের আগ্রহ বাড়াতে ক্লাসভিত্তিক ফুটবল টুর্নামেন্ট শুরু করছে হেয়ার স্কুল। মাঠের ঘাস কাটার জন্য পূর্তদপ্তরকে আবেদন জানিয়েছে।
এছাড়া হিন্দু স্কুলের পরিস্থিতিও জটিল। সেখানে ফিজিক্যাল এডুকেশনের চারটি শিক্ষক পদ রয়েছে। কিন্তু জানুয়ারি থেকে সেগুলি ফাঁকা পড়ে। ফলে এই মানের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবল টুর্নামেন্টের জন্য ছাত্রদের তৈরি করার কেউ নেই। প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বলেন, ‘আমরা স্কুল শিক্ষা কমিশনারকে মার্চেই চিঠি লিখেছিলাম, একজন অন্তত ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষক দেওয়ার জন্য। কবে তা মিলবে সেই অপেক্ষায় রয়েছি।’ শুধুমাত্র খেলাধুলো নয়, ছাত্রছাত্রীদের চারিত্রিক ও মানসিক বিকাশ ও স্কুলের শৃঙ্খলারক্ষায় বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকেন শারীরশিক্ষার শিক্ষকরাই। তাই দিনের পর দিন এই পদ শূন্য থাকায় বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। প্রসঙ্গত, এসএসসি’র মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে যে শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে, তাতে শারীরশিক্ষা বিষয়ে রয়েছে মাত্র ১৬টি শূন্যপদ।