‘সম্ভ্রম রক্ষার লড়াইয়ে’ বিকৃত ছবি নিয়ে ইমেলে পুলিশে অভিযোগ, দাবি রাজন্যার
আনন্দবাজার | ১৩ জুলাই ২০২৫
তাঁর বিকৃত ছবি তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলে এ বার আইনের দ্বারস্থ হলেন তৃণমূলের নিলম্বিত (সাসপেন্ডেড) ছাত্র নেত্রী রাজন্যা হালদার। শনিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। রাজন্যা জানান, ইমেলের মাধ্যমে তিনি যে এলাকার বাসিন্দা, সেই সোনারপুর থানা, কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখা-সহ সংশ্লিষ্ট আরও কয়েক জায়গায় অভিযোগপত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন।
দিনকয়েক আগে কসবার আইন কলেজের ঘটনা সামনে আসার পরেই সংবাদমাধ্যমে রাজন্যা অভিযোগ করেন, তাঁর একটি বিকৃত নগ্ন ছবি এক সময়ে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তৃণমূলের ছাত্র নেতাদের একাংশের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলেন তিনি। এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) বা ফোটোশপের মাধ্যমে ভুয়ো ছবি তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন রাজন্যা। তাঁর অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়। ঘটনা সত্যি হলে এত দিন আইনের দ্বারস্থ না হয়ে হঠাৎ কেন সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলছেন, সেই প্রশ্নও ওঠে। পাশাপাশি, তৃণমূল ছাত্র সংসদের একাধিক নেতা সমাজমাধ্যমে রাজন্যাকেই কটাক্ষ করেন। তা নিয়ে ‘ভিক্টিম শেমিং’-এর অভিযোগও তোলেন রাজন্যা।
অবশেষে এ দিন পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে রাজন্যা বলেন, “অনেকেই বলছেন, এটা নাকি আসল ছবি। প্রকাশ্যে চলে আসায় এখন আমি এআই বলে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছি। এতে আমার সম্মান নিয়ে টানাটানি হচ্ছে। সেই কারণেই আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক, এটা আসল না নকল। তার পরে কারা এটা করল, সেটা খুঁজে বার করুক।” কারা এই ছবি তৈরি করেছেন বা কারা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, সেই সন্দেহভাজনদের তালিকাও পুলিশকে দিয়েছেন বলে জানান রাজন্যা।
রাজন্যা জানান, ঘটনার পরেই ছাত্র সংগঠনে তাঁর ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েঅভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু সেই সময়ে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলেই দাবি তাঁর। পরবর্তীকালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও অভিযোগ জানান। দলের উচ্চ নেতৃত্বের তরফে পাশে থাকার আশ্বাস মিলেছে বলে জানান তিনি। তবে রাজন্যা বলেন, “এ ক্ষেত্রে কিন্তু লড়াইটা আমারব্যক্তিগত। আমার ব্যক্তি সম্ভ্রম বাঁচানোর লড়াই। এখানে দলের ব্যাপার নেই। দল কী ব্যবস্থা নেবে, জানি না। তবে আমার সঙ্গে যে অন্যায়টা হয়েছে, আমি মানুষ হিসেবে তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি।”
যদিও সোনারপুর থানা সূত্রে জানানো হয়েছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগপত্র মেলেনি। অভিযোগ এলে সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে। লালবাজার সূত্রেও জানানো হয়েছে, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।