• আলু চাষে 'অপয়া' তকমা, কৃষকদের সংসার বাঁচাতে তৃণমূল নেতার বিরাট পদক্ষেপ, চমকে গেলেন সকলে...
    আজকাল | ১৩ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: আলু নিয়ে অদ্ভুত কাণ্ড উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের তপসিখাতাতে। স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা আলু চাষ করলে নাকি অন্যান্য চাষীদের ফলন কম হয়। আলুর যথাযথ দাম পান না তাঁরা। আলু চাষে ওই তৃণমূল নেতা অপয়া বলেই দাবি করেছেন তাঁরা। 

    আলিপুরদুয়ারের তপসিখাতার সেই 'অপয়া' তৃণমূল নেতার নাম, প্রকাশ রায়। আলু চাষীদের সেই অভিযোগ শুনে এবছর প্রকাশ আলু চাষ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চাষীদের দাবি, সেই কারণেই তপসিখাতার বিস্তীর্ণ এলাকার চাষীদের আলুর ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু আলুর যথাযথ দাম না পেয়ে হতাশ হয়েছেন আলু চাষীরা।

    জানা গেছে, প্রকাশ প্রতি বছর ২০/২২ বিঘে জমিতে আলু চাষ করতেন। তিনি আলু চাষ করায় অন্য চাষীদের আলুর ফলন কম হত। যথাযথ দাম পেতেন না চাষীরা। সেই থেকে বন্ধুবান্ধব ও আলুচাষীদের কাছে 'অপয়া' নামে খ্যাত হয়ে যান তৃণমূল নেতা প্রকাশ। 

    আরও পড়ুন: ভয়ঙ্কর! দাউদাউ করে জ্বলছে চলন্ত ট্রেন, মুহূর্তের মধ্যে লাইনচ্যুত, একাধিক ট্রেন চলাচল বাতিল এই রুটে

    গ্রামের আলুচাষীরা সাফ জানিয়েছেন, প্রকাশ রায় আলু চাষ করলেই আলুর ফলন হয় না। দাম পান না কৃষকেরা। দিকে দিকে প্রকাশই দোষী সাব্যস্ত হন। রটে যায়, তাঁর জন্যই আলুর ফলন ও দাম পান না কৃষকরা। এভাবে কয়েকবছর চলায় অপবাদ নিয়েই চলতে হচ্ছিল প্রকাশকে। 

    জানা গেছে, আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের তপসিখাতা এলাকার ৯০ শতাংশ কৃষকই আলু চাষ করেন। এই আলু আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের কয়েকটি হিমঘরে রাখা হয়। বর্তমানে এক গাড়ি ২০০ প্যাকেট আলুর দাম ৫০ হাজার টাকা, প্রতি কেজি ৬ টাকা। আলুর ফলন বেড়ে যাওয়ায় দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা। যা খরচ তাই উঠছে। সেই ঘটনায় হতাশ কৃষকরা। তার উপর 'অপয়া' প্রকাশের জন্য আলুর ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়েছে বলে আলু চাষীদের অভিমত। 

    আলিপুরদুয়ার ১ নম্বর ব্লকের আলু চাষীদের বক্তব্য, 'আলু চাষী প্রকাশ আলু চাষ করলে আমরা আলুর দাম পাই না। এক্ষেত্রে প্রকাশের দোষ আছে। আলু চাষী প্রকাশ রায় গ্রামের আলু চাষীদের বক্তব্য শুনে খানিকটা তিতিবিরক্ত হয়ে এবছর আর আলু চাষই করেননি। আর তাতেই নাকি এবার আলু চাষীদের ফলন ভাল হয়েছে। কিন্তু দাম পাচ্ছেন না আলু চাষীরা।' 

    বাধ্য হয়ে দোষ কাটাতে শনিবার রাতে তপসিখাতা গ্রামে মা কালীর পুজো দেন প্রকাশ রায়। এমনকী আলুচাষী ও গ্রামের মানুষজনদের নিয়ে কীর্তনের আসরও বসে। সবাইকে পাতপেড়ে খাওয়ানো হয় খিচুড়ি প্রসাদ। আর গ্রামের সব আলু চাষীদের কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেন, তিনি আর আলু চাষ করবেন না। 

    এই বিষয়ে আলু চাষী তথা স্থানীয় সমাজসেবক প্রকাশ রায় বলেন, 'আমি চাই গ্রামের আলু চাষীদের আলুর উৎপাদন বাড়ুক। তাঁরা আলুর যথাযথ দাম পান। আমি গ্রামবাসীদের কথা ভেবে আর আলু চাষ করব না।আমার দোষ কাটাতে আজ পুজা করলাম। গ্রামবাসীদের ডেকে কীর্তন করা হল। গ্রামের মানুষের কাছে কড়োজোরে প্রার্থনা করলাম। আমি আর আলু চাষ করব না। আমাকে যে অপবাদ দেওয়া হয়েছিল, তা ঘোচানোর জন্য আমি পুজা ও কীর্তনের আয়োজন করেছি।' যা শুনে চমকে যান সকলে। 
  • Link to this news (আজকাল)