সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস প্রশ্নে বিপ্লবীরা হয়ে গিয়েছেন সন্ত্রাসবাদী! তা নিয়ে তুঙ্গে ওঠে বিতর্ক। অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের অপমান মেনে নিতে পারেনি কেউ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্ষমা চাওয়াতে তাতে কিছুটা প্রলেপ পড়েছে। তবে এই প্রশ্ন বিভ্রাটের পিছনে রয়েছে আভ্যন্তরীণ রাজনীতি? উঠছে সেই প্রশ্ন। শিক্ষাবিদদের একাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিকেই বেশি করে দায়ী করছেন। কিন্তু কেন?
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রে জানা যাচ্ছে, অধ্যাপকদের মধ্যে ঠান্ডা লড়াইয়ের কথা সবাই জানে। সদ্য অপসারিত ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নির্মলবাবুর উত্থান তাঁর সহকর্মীদের অনেকেই মেনে নিতে পারেন না। মাত্র ৪০ বছরের মধ্যেই তিনি বিভাগীয় প্রধান হন। শুধু তাই নয়, দায়িত্ব নিয়ে একের পর এক সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। যাতে অনেকেরই বিরাগভাজন হয়েছেন। দেড় বছর বিভাগীয় প্রধান থাকাকালীন ওয়েবকুপা সংগঠনে যুক্ত হয়ে সহকর্মীদের অনেককেই সংগঠনের ছাতার তলায় নিয়ে এসেছেন। ভেঙেছেন ঘুঘুর বাসা। আর তাতেই নাকি তাঁর আরও ‘শত্রু’ বাড়তে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’বছর আগেও প্রশ্নপত্রে এধরনের ভুল বেরিয়েছিল। সেই সময় নির্মলবাবু বিভাগীয় প্রধান ছিলেন না। তখন কিন্তু এত বিতর্ক হয়নি। এদিকে প্রেস থেকে আসা প্রশ্নপত্রের প্রুফ দেখায় যে ত্রুটি রয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন নির্মলবাবু নিজেই। তাতেই উঠছে অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কোন্দল।
মেদিনীপুরের মতো জায়গা যেখান থেকে অনেকে বিপ্লবী আত্মত্যাগ করেছেন। সেই এলাকার বিশ্ববিদ্যালয়ে কী করে এমন ভুল হতে পারে তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেছেন, “প্রবল প্রতিবাদের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভুল স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছেন। আমরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছি।”
অন্যদিকে, এই কাণ্ড নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় ওঠে। বিরোধী দলগুলি একাধিক প্রশ্ন তুলে সরব হয়। তবে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেছেন, “বিরোধীদের হাতে কোনও ইস্যু নেই। তাই তারা জলঘোলা করতে মরিয়া। স্বাধীনতা আন্দোলনে যাঁদের অংশগ্রহন নেই, যাঁদের পূর্বপুরুষ মুচলেকা দিয়ে ব্রিটিশদের দালালি করে স্বাধীনতা আন্দোলনের বিরোধীতা করেছেন, তাঁদের মুখে বিপ্লবীদের সম্মানের কথা মানায় না।” সব মিলিয়ে ইতিহাস প্রশ্নের কাণ্ডের বিতর্ক থেমেও থামছে না।