• এক মাথা, চার হাত ও চার পায়ের অদ্ভুতদর্শন শিশুর জন্ম ভাতারে, ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই মৃত্যু
    প্রতিদিন | ১৩ জুলাই ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার, কাটোয়া: ১৯ বছরের গর্ভবতী বধূকে বাঁচাতে ২০ সপ্তাহের মাথায় অস্ত্রোপচার করে প্রসব করান চিকিৎসক। আর তারপরেই নবজাতককে দেখে চক্ষু চড়কগাছ চিকিৎসক থেকে নার্সিংহোমের কর্মীদের।

    পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার বাজারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম নিল এক মাথা-চার হাত ও চার পা বিশিষ্ট অদ্ভুতদর্শন শিশু। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় যাকে বলা হয় কনজয়েন্ট টুইন বা সংযুক্ত যমজ বা সিয়ামিজ যমজ। আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে ওই ধরনের শিশুর অস্তিত্ব ধরা পড়লে প্রসূতিকে বাঁচাতে গর্ভবস্থার ২০ সপ্তাহের মাথায় এদিন শনিবার অস্ত্রোপচার করে প্রসব করান বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিনিয়র গাইনি সার্জেন ড. কৃষ্ণপদ দাস। যদিও তিনি জানান, ভূমিষ্ট হওয়ার পরেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। তবে প্রসূতি সুস্থ আছেন এবং বর্তমানে তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

    হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে তন্ময় যশ জানিয়েছেন, পূর্ব বর্ধমান জেলার নাদনঘাট থানার সাহাজাদপুরের বাসিন্দা জয় মণ্ডল নামে এক যুবক তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ১৯ বছরের বিভা মণ্ডলকে ভাতার বাজারের কদমতলার বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসক কৃষ্ণপদ দাস জানান, আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে বধূর গর্ভে কনজয়েন্ট টুইন বা সংযুক্ত যমজের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছিল। তখনই জানা যায় যে ভ্রুণস্থ শিশুটির একটি মাথা, চার হাত ও চারটি পা রয়েছে। এছাড়া মাথাতে টিউমারের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। যা ডাক্তারি পরিভাষায় ‘এনসেফালাইটিস’ বলা হয়।

    তিনি বলেন, “এই ধরনের শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। উপরন্তু প্রসূতির গর্ভাবস্থা অব্যাহত থাকলে তার জীবন সংশয় দেখা দিত। তাই প্রসূতিকে বাঁচাতে আমরা ভ্রুণকে টার্মিনেট করানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হই। দুই লক্ষের মধ্যে একটি এই ধরনের অস্বাভাবিক শিশু জন্মাতে দেখা যায়। এদিন শনিবার দুপুর দুটো নাগাদ প্রসূতির সিজার করেন ডাঃ কৃষ্ণপদ দাস। তবে জন্মানোর পরেই শিশুটির মৃত্যু হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন শেষের দিকে যখন জাইগটের বিভাজন হয় তখন কনজয়েন্ট টুইনের রুপান্তর ঘটে।”

    বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকায় এই ধরনের ঘটনা বেশি দেখা যায়। প্রায় অর্ধেক মৃত জন্মগ্রহণ করে এবং বাকি শিশুর মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ ২৪ ঘন্টার মধ্যে মারা যায়।
  • Link to this news (প্রতিদিন)