ভাঙল ৬৮ বছরের বাম দুর্গ, কামালপুর কৃষি সমবায়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ তৃণমূলের...
আজকাল | ১৪ জুলাই ২০২৫
মিল্টন সেন: ৬৮ বছরের বাম রাজত্বে ইতি। সিজা কামালপুর কৃষি সমবায় উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে দখল নিল তৃণমূল কংগ্রেস। মোট ৪৫টি আসনের মধ্যে ৩৩টিতে জয়ী হয়েছেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থী। বাকি ১২টি আসনের মধ্যে ৬টিতে সিপিএম এবং ৬টিতে বিজেপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছেন। সিজা কামালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অরিজিৎ দাস জানিয়েছেন, এই সমবায়ে ৬৮ বছর ধরে ভোট হয়নি। ১৯৫৭ সালে কৃষকদের সুবিধার্থে গঠিত হয়েছিল সিজা কামালপুর কৃষি সমবায় উন্নয়ন সমিতি লিমিটেড। মূলত চাষিদের ঋণ প্রদান ও কৃষিকাজে সহায়তার উদ্দেশ্যেই এই সমবায়ের সূচনা।
বোর্ড গঠনের মাধ্যমে চলত সমবায়ের কার্যক্রম। এতদিন সদস্যদের মধ্যেকার বোঝাপড়াতেই গঠিত হত বোর্ড, তবে সচরাচর শাসকদলই প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারির পদ দখলে রাখত। সম্প্রতি বিজেপির তরফে রাজ্যের সব সমবায়ে ভোট করানোর দাবি তোলা হলে এই সমবায়েও নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়। ৪৫ জন বোর্ড সদস্য নির্বাচনে এবার সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের প্রার্থী না থাকলেও, প্রার্থীরা ছিলেন দলসমর্থিত। তৃণমূল ৪৫টি আসনেই মনোনয়ন জমা দিলেও, সিপিএম ও বিজেপি একত্রে সব আসনে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়। রবিবার খামারগাছি হাই স্কুলে সকাল থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। কড়া নিরাপত্তায় মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।
আরও পড়ুন: কসবার পর মুর্শিদাবাদ, আইন কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি ও ব়্যাগিংয়ের অভিযোগে গ্রেপ্তার তৃতীয় বর্ষের
বিকেলে ফলপ্রকাশ হতেই স্পষ্ট হয়, প্রায় ৭০ শতাংশ আসনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। সিজা কামালপুর কৃষি সমবায় এখন পুরোপুরি শাসক দলের দখলে। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর থেকেই শুরু হয়েছে নতুন বোর্ড গঠনের তোড়জোড়। দীর্ঘ ছয় দশক পরে ভোটের মাধ্যমে এই ঐতিহ্যবাহী সমবায়ে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল। উল্লেখ্য, সম্প্রতি হুগলির পান্ডুয়ায় চারটি সমবায় নির্বাচনে একচেটিয়া জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। যদিও কিছু সমবায়ে বিজেপি ও সিপিএম লড়াই দিলেও শেষ হাসি হাসে শাসক দলই। দেপাড়া কৃষি উন্নয়ন সমিতির ১২টি আসনের সবকটিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করে তৃণমূল কংগ্রেস।
মাগুরা সমবায়-এ ৯টি আসনে তৃণমূল ও সিপিএমের মধ্যে সরাসরি লড়াই হয়, সেখানে বিজেপি প্রার্থী দিতে পারেনি। সব আসনেই জয় পায় তৃণমূল। পাকরি রাধানগর কৃষি উন্নয়ন সমবায়ে, ৭৭টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জেতে ৪৭টিতে, বিজেপি ১৩টি ও সিপিএম ১৪টি আসনে। ৩টি আসনে কেউই প্রার্থী দেয়নি।
আরও পড়ুন: সমাজমাধ্যমে 'স্ট্যাটাস' দিয়ে গ্রেপ্তার মুর্শিদাবাদের যুবক, কারণ জানলে চমকে যাবেন ...
নান্দিন গ্রাম কৃষি উন্নয়ন সমবায়-এর ৫০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতে ৩৪টি, বিজেপি ১৫টি ও সিপিএম একটি আসন জেতে। এই জয়কে ঘিরে পান্ডুয়াজুড়ে শুরু হয় সবুজ আবিরে উৎসব। আনন্দে ফেটে পড়েন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। পান্ডুয়া ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আনিসুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, ‘এই জয় প্রমাণ করে পান্ডুয়া তৃণমূলের দুর্গে পরিণত হয়েছে। মমতা ব্যানার্জির কৃষি ও উন্নয়নমুখী নীতিতে কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন। তাই বিরোধীরা অনেক জায়গায় প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না। ২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে আমরা এখান থেকেও জয় তুলে আনব’।