মারণ রোগকে বোল্ড আউট! ভয়কে জয় করে চন্দন সেন নির্দেশিত নাটকে মঞ্চ মাতালেন ক্যানসারজয়ীরা...
আজকাল | ১৪ জুলাই ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: ফিরে আসা যায় এভাবেও! ভয়কে জয় করতে হয় এভাবেই। মারণ রোগ ক্যানসারকে হারিয়ে সমাজের কাছে সেই বার্তাই তুলে ধরলেন একদল ক্যানসারজয়ী। তবে সেই বার্তাটা তাঁরা তুলে ধরলেন একটু অন্যরকম ভাবে। ক্যানসার মানেই যে জীবনে সবকিছু শেষ এমনটা নয়, এই বার্তা সমাজের কাছে তুলে ধরতে তাঁরা বেছে নিলেন নাটকের মতো এক জনপ্রিয় শিল্পকে। আর তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আরও এক ক্যানসারজয়ী নাট্যশিল্পী, অভিনেতা চন্দন সেন। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের উদ্যোগে শনিবার কলামন্দিরে মঞ্চস্থ হল চন্দন সেনের নির্দেশনায় ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঁচটি নাটিকাকে মঞ্চস্থ হয় এদিনের অনুষ্ঠান। অভিনয়ে অংশ নিয়েছিলেন একাধিক ক্যানসারজয়ীরা। জানা গেল, তাঁরা ক্যানসারকে হারিয়ে বর্তমানে পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনযাপন পালন করছেন। অনেকের আবার অভিনয়ের সঙ্গে যোগাযোগও নেই। কিন্তু এই অভিনব উদ্যোগ দেখে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা। তারপর চন্দন সেনের হাত ধরে চলেছে মহড়া। অবশেষে রবিবার দর্শকদের সামনে তাঁরা অভিনয় করে দেখিয়েছেন। ‘রঙ্গ ব্যঙ্গ’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন ক্যানসারজয়ীদের পাশাপাশি অশোকনগর নাট্যনয়নের একাধিক কলাকুশলীরা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা, বিধায়ক দেবাশিস কুমার, প্রাক্তন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্য অধিকর্তা স্বপন সোরেন ও পরিচালক নন্দিতা রায়। প্রত্যেকেই এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঁচটি ক্ষুদ্র নাটকের মধ্যে ছিল আর্য ও অনার্য, অন্ত্যেষ্টি সৎকার, নতুন অবতার, অরসিকের স্বর্গপ্রাপ্তি, স্বর্গীয় প্রহসন। তবে এই উদ্যোগের এখানেই শেষ নয়। জানা গেল, পরবর্তীকালে জেলায় জেলায় গিয়েও এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর মূল লক্ষ্যই হল সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্যানসার নিয়ে ভয় কাটানো, পাশাপাশি, ক্যানসার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো।
মানুষের মধ্যে ক্যানসারের ভয় কাটানোর মাধ্যম হিসেবে নাটককে বেছে নেওয়া কেন? এই প্রশ্নে চন্দন সেন জানান, ‘ক্যানসার আক্রান্তরা প্রচণ্ড অবহেলিত এবং অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তাই এই ধরনের অনুষ্ঠানে তারা বাঁচার রসদ পান। প্রায় আড়াই মাস ধরে আমরা মহড়া চালিয়েছি এই নাটকের। তারপরেই মঞ্চস্থ করার ভাবনা হয়েছে। পরবর্তীকালে জেলায় গিয়ে অনুষ্ঠান করারও ভাবনা রয়েছে’।
২০০৫ সালে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে পরবর্তীকালে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে গিয়েছেন শিলিগুড়ির এক বাসিন্দা। তিনি জানান, ‘আমি পেশায় শিক্ষিকা। স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছিলাম ২০০৫ সালে। সেখান থেকে ক্যানসারকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে উঠি। এখন পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছি, চাকরিও করছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই উদ্যোগের কথা জানতে পেরে নাম দিয়েছিলাম। অডিশনে সুযোগ পেয়ে কলকাতায় থেকে আড়াই মাস ধরে প্রস্তুতি নিয়েছি এই দিনটার জন্য। প্রথম অভিনয় করলাম মঞ্চে সেটা বুঝতেই পারিনি’।