অংশুপ্রতীম পাল, খড়গপুর: দশম শ্রেণির এক ছাত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের নজরে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। উদ্যোগ নেওয়া হয় দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার। খবর পেয়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্স আসে। ছাত্রীর বাড়ির সামনে পর্যন্ত অ্যাম্বুল্যান্সটি পৌঁছতে পারেনি। কারণ, রাস্তার বেহাল দশা। বাধ্য হয়ে কিশোরীকে একটি দোলনায় চাপিয়ে ১৫০ মিটার বেহাল রাস্তা পার করে অ্যাম্বুল্যান্সের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে সবং গ্ৰামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। চিকিৎসকরা জানান মৃত্যু হয়েছে কিশোরীর। শনিবার দুপুরের এই ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল। এভাবে কুৎসা রটানো হচ্ছে বলে দাবি সবংয়ের বিধায়ক তথা মন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার।
শনিবার দুপুরে সবংয়ের ভেমুয়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের বসন্তপুর গ্ৰামের বাসিন্দা রতনচন্দ্র পাড়ির কিশোরী কন্যার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। নাবালিকা সবং থানার বুরাল গ্ৰাম পঞ্চায়েতের কেরুর হাই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি যুবকের সঙ্গে নাবালিকার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্কের টানাপোড়েনে চরম সিদ্ধান্ত নেয় সে। সবংয়ের বিধায়ক তথা রাজ্যের সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়ন ও অনুসন্ধান মন্ত্রী মানস ভুঁইয়া বললেন, “একটি রটনা হচ্ছে দোলায় করে আনা হয়েছে। এই দোলাটোলা কিছুই নয়। এই অঞ্চলের ৯৬টি রাস্তা গ্ৰাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি করেছে। গোটা জেলার ২১১টি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি এই ভেমুয়া গ্ৰামপঞ্চায়েত হয়েছে। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় এত উন্নয়ন হয়েছে এই ভেমুয়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতে। অথচ রটিয়ে দেওয়া হল রাস্তা নেই। বাড়ি থেকে ঢালাই রাস্তার দূরত্ব ১৫০ মিটার। ওইটুকু নিয়ে এসেছে। আর একশ্রেণির মানুষ রটিয়ে দিলেন রাস্তার জন্য মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে।”
অপরদিকে, সবং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত ও পরিবহন কর্মাধ্যক্ষ তরুণ মিশ্র বলেন, “ভেমুয়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতে ১০০-র কাছাকাছি রাস্তা করা হয়েছে। আরও হবে। তবে এই ১৫০ মিটার রাস্তার জন্য মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে এই প্রচার সর্বৈব মিথ্যা।” আর ভেমুয়া গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাজীব শী বলেন, “১৫০ মিটার রাস্তা খারাপ ঠিকই। কিন্তু তার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেরি হওয়ার কারণে মেয়েটির মৃত্যু হয় নি। মেয়েটির বাড়িতেই মৃত্যু হয়েছে। খবর পাওয়ার পর আমরাই উদ্যোগ নিয়ে অঞ্চল থেকে একটি অ্যাম্বুল্যান্স পাঠিয়ে দিয়েছিলাম।” তবে এই ব্যাপারে মৃত নাবালিকার পরিবারের কারোর কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বারবার ফোন করা হলেও মেয়েটির পরিবারের কেউ ফোন ধরেননি।