• টানা বৃষ্টিতে বাড়ছে জলস্তর, মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা!
    প্রতিদিন | ১৪ জুলাই ২০২৫
  • সম্যক খান, মেদিনীপুর: নদী ভাঙনের সমস্যা ছিলই। কিন্তু টানা বর্ষার জেরে নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় সেই প্রবণতা বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে প্রবল সমস্যায় মেদিনীপুর সদর ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। আংশিক প্রভাব পড়েছে মেদিনীপুর শহরেও। এখনই পদক্ষেপ না করা হলে ধীরে ধীরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে একটা বড় এলাকা।

    কাঁসাই নদীর ভাঙন ক্রমশ গিলে ফেলতে চাইছে মেদিনীপুর সদর ব্লকের কনকাবতী, মণিদহ, চাঁদড়া ও ধেড়ুয়ার একের পর এক গ্রামকে। স্থানীয় গ্রামবাসীদের দাবি, অতীতে মণিদহ পঞ্চায়েতের ধনেশ্বরপুরের মতো বহু গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। এখন ফের ফুলে ফেঁপে উঠেছে নদীগর্ভ। দশদিন ধরে নদী একেবারে পাড় ছুঁইছুঁই। শনিবার থেকে জলস্তর আরও বেড়েছে। তলিয়ে যাচ্ছে বিঘার পর বিঘা কৃষিজমি। ফলে আতঙ্কে সকলে। অনেকেই নানান ফল-ফুলের বাগান সরিয়ে নিয়েছেন। গাছও কেটে নিয়ে চলে যাচ্ছেন ঘরে জ্বালানি হিসেবে ব‌্যবহারের জন‌্য। এই মুহুর্তে মণিদহ, ফরিদচক-সহ বিভিন্ন এলাকায় নদীর পাড় ধসে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে। ইতিমধ‌্যে এলাকার প্রায় কুড়ি বিঘা কৃষিজমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। এখনই ব্যবস্থা না নিলে আগামিদিনে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে।

    মণিদহ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা প্রশান্ত বেরা বলেন, ধনেশ্বরপুর গ্রামে ২০-২৫ টি বাড়ি ছিল। পুরো গ্রামটিই এখন নদীগর্ভে মিশে গিয়েছে। আর কোনও চিহ্ন নেই। ধীরে ধীরে একই অবস্থা হতে চলেছে দুর্গাচাটি, তেঁতুলিয়া, মনিদহ, রেড়াপাল, বেড়াপাল, গুড়গুড়িপাল, শালিকার মতো গ্রামগুলোরও। গ্রামবাসীদের দাবি, অবিলম্বে বৃহৎ উদ্যোগ নিয়ে নদীপাড় বাঁধানো না হলে আগামী দিনে ঘোর সংকটের মধ্যে পড়বেন নদীপাড় সংলগ্ন গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রাম পঞ্চায়েতের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সাধারন মানুষও একদিকে যেমন নদীর চরিত্র বদলকে দায়ী করছেন তেমনি এলাকার বৈধ-অবৈধ বালিখাদানগুলিকেও দায়ী করছেন। এলাকায় ভাঙনের পেছনে বালি খাদানগুলির একটা বড় ভূমিকা রয়েছে তা স্বীকারও করে নিয়েছেন গ্রাম পঞ্চায়েত কর্তারা। পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, “পুরসভার অর্থে পাড় বাঁধানো সম্ভব নয়। জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের কাছে পাড় বাঁধানোর অনুরোধ জানানো হবে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)