তৃণমূল নেতা খুন: মইনুলকে আড়াল করা হলে রুখে দাঁড়াব, হুঙ্কার সাবিত্রীর
বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, মালদহ ও মানিকচক: তৃণমূল কর্মী আবুল কালাম আজাদের নৃশংস খুনের ঘটনায় মালদহে তৃণমূলের মধ্যেই ক্রমশ জোরালো হচ্ছে অভিযুক্ত মইনুল শেখের কঠোর শাস্তির দাবি। শুধু তাই নয়, তৃণমূলের কোনও মহল থেকে মইনুলকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে আড়াল করার চেষ্টা হলে রুখে দাঁড়াবেন বলে হুঙ্কার দিয়েছেন মানিকচকের বিধায়ক তথা মালদহ জেলা পরিষদের মেন্টর সাবিত্রী মিত্র। একধাপ এগিয়ে সদ্য নিযুক্ত মালদহ জেলা মহিলা তৃণমূল সভানেত্রী প্রতিভা সিং জানিয়েছেন, মইনুলকে যে পদ্ধতিতে তৃণমূলে নেওয়া হয়েছিল, দলের গঠনতন্ত্রে তার মান্যতা নেই। সুতরাং মইনুলকে তৃণমূল কোনওভাবে গ্রহণ করেনি। পাশাপাশি, দাবি উঠেছে, অভিযুক্তের সঙ্গে সব রকম যোগাযোগ স্পষ্ট অস্বীকার করুক জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
ওই খুনের ঘটনার পরে শনিবারই মানিকচকের গোপালপুরে গিয়ে খুন হয়ে যাওয়া তৃণমূল কর্মী আবুল কালাম আজাদের দরাজ প্রশংসা করেন সাবিত্রী মিত্র। তিনি জানিয়ে দেন, ঘটনার শেষ দেখে ছাড়বেন। সাবিত্রী বলেন, দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে সবকিছু জানিয়েছি। বলেছি আমি ন্যায়ের পক্ষে। কোনও খুনের ঘটনা মানব না।
এরপরই তিনি বলেন, মইনুল একজন জমি মাফিয়া। ওকে আমরা পঞ্চায়েত নির্বাচনের টিকিটও দিইনি। দল থেকে তাড়ানো হয়েছিল। তারপরে ও কী করে আবার দলে এল জানি না। কে ওকে দলে নিয়েছে জানা নেই। এই মাফিয়াদের অনেক লাইন আছে। তবে, মইনুল তৃণমূলের লোক নয়।
তাঁর কথার সূত্র ধরে প্রতিভা সিং ‘বর্তমান’কে বলেন, খুনের ঘটনা ঘটেছে বলেই শুধু নয়। মইনুল একজন কুখ্যাত দুষ্কৃতী। আমি ব্লক তৃণমূল সভাপতি হিসাবে ওকে দলে নেওয়ার অনুমোদন দিইনি। ব্লক সভাপতির অনুমোদন ছাড়া কাউকে দলে নেওয়ার কোনও মান্যতা নেই। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী মইনুল তৃণমূলের কেউ নয়। ও কংগ্রেসের টিকিটে জেতা পঞ্চায়েত সদস্য।
দলের একাংশের ভূমিকা নিয়ে পরোক্ষে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি পুলিসের উপরও কার্যত অনাস্থা প্রকাশ করেছেন সাবিত্রী। তিনি বলেন, পুলিস সুপার প্রদীপকুমার যাদব ভালো কাজ করছেন। মূল অপরাধী সহ চারজন গ্রেপ্তার হয়েছে। তদন্তকারী পুলিস আধিকারিকের ওপর আমার আস্থা নেই। একের পর এক ছুরির আঘাতে জখম আজাদ মৃত্যুশয্যায় তাঁর পরিবারকে ফোন করেছিলেন। কিন্তু আজাদের পরিবারের সদস্যরা যখন তাঁকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করতে ছুটে যাচ্ছিল, তখন মিল্কি ফাঁড়ির পুলিস তাঁদের বাধা দেয়। পুলিসের ওই কর্মীরা কী চাইছিলেন? আজাদ শেষ পর্যন্ত মারা যাক!
সাবিত্রীর অভিযোগ নিয়ে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা পুলিসের কোনও আধিকারিক। অন্যদিকে, জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি মেনে নিয়েছেন মইনুল তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, কার মাথায় কী অপরাধের ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা তো বোঝা যায় না। ও যা করেছে, তাতে পুলিস কঠোরতম পদক্ষেপ করবে। মইনুল পদে ছিল না। রাজনৈতিক গুরুত্বও নেই। তাই দল থেকে বহিষ্কারের প্রশ্নও ওঠে না।