নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: স্ত্রীর পরকীয়ার জেরে রহস্যমৃত্যু স্বামীর। মৃত ব্যক্তির বাড়ি শিলিগুড়ির দার্জিলিং মোড়ে। তবে ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে, তাঁর শ্বশুরবাড়িতে। মৃতের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিহারে শ্বশুরবাড়ি নিয়ে গিয়ে খুন করা হয়েছে ছেলেকে। যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত মৃতের পরিবার বিহারে কিংবা শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি। প্রধাননগর থানার পুলিস জানিয়েছে, নির্দিষ্ট অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।
মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ১৫ বছর আগে বিহারে বিয়ে হয় ছেলের। দম্পতির দুই সন্তান রয়েছে। শিলিগুড়ির দার্জিলিং মোড়ে সংসার পেতেছিল দম্পতি। অভিযোগ, সম্প্রতি পারিবারিক অশান্তি শুরু হয়। প্রধাননগর এলাকায় এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির স্ত্রী সম্পর্কে জড়ান। মৃত ব্যক্তি বিহারের বাসিন্দা হলেও দার্জিলিং মোড় সংলগ্ন এলাকাতেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে অনেকদিন ধরেই থাকেন। বিহারে তাঁর স্ত্রী ও চার সন্তান আছে। স্ত্রীর পরকীয়ার বিষয়টি জানতে পারেন স্বামী। এতে তিনি আপত্তি করেন। তিনি স্ত্রী ও ওই ব্যক্তিকে একাধিকবার ডেকে সম্পর্ক ভেঙে দেওয়ার অনুরোধ জানান। কিন্তু বহু চেষ্টা করলেও সেই সম্পর্কে ছেদ পড়েনি।
পরিবারের অভিযোগ, স্বামীর অনুপস্থিতিতে দু’জন অবাধে মেলামেশা করেন। যা পাড়ার লোকজনও জেনে যান। গত মঙ্গলবার স্বামী পাড়ার লোকজন, স্ত্রী এবং ওই ব্যবসায়ীকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। তারপরেই পরিস্থিতি অন্যদিকে মোড় নেয়। পরের দিন বুধবার স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে তিনি বিহারে শ্বশুরবাড়িতে চলে যান। এদিকে, শুক্রবার রাতে দার্জিলিং মোড়ে থাকা বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথাও হয় তাঁর। সেই রাতেই গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওই ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় শ্বশুরবাড়িতে। পরের দিন শনিবার বিষয়টি জানানো হয় দার্জিলিং মোড়ের বাড়িতে।
এরপর ওই ব্যক্তির দেহ আনতে তাঁর বাড়ির লোকজন গেলে তাঁদের সঙ্গে নানা বিষয়ে কথা কাটাকাটি হয়। শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সঙ্গে একপ্রস্থ হাতাহাতিও হয়। এরপরেই সেখান থেকে চলে আসেন মৃতের বাড়ির লোকেরা। ঘটনার পর খোঁজ শুরু করতেই জানা যায়,ওই ব্যবসায়ীও পলাতক। মৃতের বাড়ির লোকেদের অভিযোগ, তাঁদের ছেলেকে মেরে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই ঘটনার পিছনে ওই ব্যবসায়ী এবং মৃতের স্ত্রীর হাত রয়েছে।
মৃতের বোন রবিবার বলেন, বিষয়টি নিয়ে বিহারে সংশ্লিষ্ট থানায় গিয়ে সেখানকার থানায় অভিযোগ দায়ের করব আমরা। এদিন প্রধাননগর থানায় মৌখিকভাবে দাদার রহস্য মৃত্যুর ব্যাপারে জানিয়েছি। আমাদের আশঙ্কা, দাদাকে বিহারে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। আর এই খুনের সঙ্গে বউদি এবং দার্জিলিং মোড়ের এক ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে। আমরা চাই, পুলিস গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করুক।
প্রধাননগর থানার আইসি বাসুদেব সরকার বলেন, কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ এলে খতিয়ে দেখা হবে।