তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি পীযূষ ঘোষকে গুলি করে খুন ঘিরে রহস্য দানা বেধেছে। কী কারণে খুন তার উত্তর খুঁজছে পুলিস। ঘটনাস্থল লাগোয়া একটিমাত্র বাড়ির মহিলার ভূমিকায় পুলিসের সন্দেহ রয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, শনিবার রাতে অঞ্চল সভাপতি ওই মহিলার সঙ্গে দেখা করতেই বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। গভীর রাতে বাড়ির সামনেই তিন রাস্তার মোড়ে অঞ্চল সভাপতিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। সাঁইথিয়া থানার পুলিস রবিবার সকালেই ওই মহিলা, আরও এক মহিলা সহ তিনজনকে আটক করেছে। খুনের ঘটনার কিনারা করতে পুলিস তিনজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছে। ঘটনায় ইতিমধ্যে পুলিস একাধিক তথ্য হাতে পেয়েছে। অঞ্চল সভাপতি খুনের ঘটনায় তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বও যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। জেলা তৃণমূলের কোর কমিটির চেয়ারপার্সন আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পুলিস তদন্ত করছে। তবে কী হয়েছে তা স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে।
পীযূষ এলাকায় প্রভাবশালী নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। বাড়ি থেকে মাত্র ৫০০মিটার দূরেই ওই মহিলার বাড়ি। প্রায় এক বছর আগে মহিলার স্বামী মারা যান। বাড়ির সামনেই ছোট একটি দোকান রয়েছে। মাঝেমধ্যেই ওই দোকানে যাতায়াত ছিল অঞ্চল সভাপতির। ওই মহিলার সঙ্গে পীযূষের কোনও বিশেষ সম্পর্ক ছিল কিনা, পুলিস খতিয়ে দেখছে। তদন্তকারীদের অনুমান, সম্পর্কের মাঝে তৃতীয় কোনও ব্যক্তি চলে আসায় এই ঘটনা ঘটতে পারে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, রাতে পীযূষ বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ওই মহিলার বাড়ি পৌঁছেছিলেন। বাড়ির উল্টোদিকে রাস্তার পাশে তাঁর বাইক দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। ওই বাড়ি থেকে বেরনোর পরই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। যদিও কে গুলি চালাল তা পরিষ্কার নয়। কার ফোন পেয়ে অঞ্চল সভাপতি রাতের অন্ধকারে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তা জানার চেষ্টা করছে পুলিস।
সূত্রের খবর, পীযূষ বালির কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর একটি ট্রাক্টরে বালি পরিবহণের কাজ হতো। সেক্ষেত্রে ব্যবসায়িক কোনও প্রতিহিংসার ঘটনায় এই খুন কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। অন্যদিকে, শাসক নেতা খুনের ঘটনায় সম্পর্কের টানাপোড়েনের তত্ত্ব জোরালো হতে শুরু করেছে। জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, পারিবারিক ব্যক্তিগত এবং মহিলা সংক্রান্ত ব্যাপারে এই ঘটনা ঘটতে পারে। তদন্ত হলে সঠিক বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
পুলিস তদন্তের জাল গোটানোর কাজ শুরু করেছে। যদিও পুলিসকর্তারা অবশ্য এনিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তাঁদের দাবি, অতি দ্রুত ঘটনারা কিনারা হবে। খুনের ঘটনার পর থেকে শান্ত এলাকা হিসেবে পরিচিত কোনারপুর গ্রামের বাসিন্দাদের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।