• প্রসূতি মৃত্যুতে তদন্ত কমিটিকে চটজলদি রিপোর্ট জমার নির্দেশ
    বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগে তদন্ত কমিটি গড়লেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। তিন সদস্যের ওই কমিটির চেয়ারপার্সন হয়েছেন ডেপুটি সিএমওএইচ-৩ দিব্যেন্দুকুমার চক্রবর্তী। এছাড়াও তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ উমাশঙ্কর দাস ও অ্যানাস্টেটিস্ট অশোককুমার পড়্যাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে। গত ৮ জুলাই পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় ওই তদন্ত কমিটি গড়েছেন। সেই সঙ্গে দ্রুত রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিয়েছেন।

    প্রসঙ্গত, গত ৩০ জুন পাঁশকুড়া থানার মানুর গ্রামের প্রিয়াঙ্কা বাগ পড়িয়াকে(২৮) প্রসবের জন্য পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন সকাল ১১টা নাগাদ তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৪টা নাগাদ সিজার হয়। প্রিয়াঙ্কাদেবী পুত্রসন্তানের জন্ম দেন। এটি তাঁর দ্বিতীয় সন্তান। প্রসবের পর রাত বাড়তেই ওই প্রসূতির শারীরিক অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে ওঠে। রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে তমলুক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়। হাসপাতালে আনার পথেই তাঁর মৃত্যু হয়।

    চিকিৎসার গাফিলতির জেরে ওই প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে পরিবারের লোকজন সরব হন। তাঁরা এনিয়ে পাঁশকুড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। এছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক এবং মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে তদন্ত চেয়ে অভিযোগ জানান। সিজার করার সময় চিকিৎসকের ভুলেই অতিরিক্ত রক্তক্ষণের জেরে মৃত্যু বলে পরিবারের অভিযোগ। তাছাড়া, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা হয়েছে। গত ১৬ জুন শেষবার চেকআপেও কোনও সমস্যা ছিল না। সবকিছুই স্বাভাবিক ছিল। তারপর কেন সরকারি হাসপাতালে ওই প্রসূতির মৃত্যু হল তার কারণ খুঁজতে জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর একটি তদন্ত কমিটি গড়েছে। ওই কমিটিকে দ্রুত তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

    মৃত বধূর দাদা আশিস পড়িয়া বলেন, সিজার করার সময় চিকিৎসকের গাফিলতিতেই আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে। এটি বোনের দ্বিতীয়বার সিজার হয়েছিল। গর্ভে সন্তান আসার পর থেকে কোনওরকম সমস্যা ছিল না। সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল। আমরা এই ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকের শাস্তি চাই। এজন্য যতদূর যেতে হয় আমরা যেতে প্রস্তুত। রাত ১২টার সময় আমার বোনকে সঙ্কটজনক অবস্থায় রেফার করার পর সদ্যোজাতকেও হাসপাতাল থেকে মায়ের সঙ্গে বের করে দেওয়া হয়। অত্যন্ত অমানবিক আচরণের পরিচয় দিয়েছেন পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

    মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায় বলেন, পাঁশকুড়া সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে প্রসূতি মৃত্যুর ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গড়া হয়েছে। ডেপুটি সিএমওএইচ-৩ এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের ওই কমিটি গোটা ঘটনার তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেবেন।
  • Link to this news (বর্তমান)