নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: তৃণমূলকে রাজনৈতিকভাবে কোণঠাসা করার উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। রবিবার বহরমপুরে একটি স্বাস্থ্যকর্মী সংগঠনের অনুষ্ঠানে এসে এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। তিনি বলেন, আমরা বাড়তি টাকা চাইছি না। শুধু চাইছি, বাংলার বকেয়া মিটিয়ে দিন। পদ্ম শিবিরের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, যেন তেন প্রকারে রাজ্য দখল করাই বিজেপির উদ্দেশ্য। কিন্তু, ক্ষমতায় এলে কী করবে? কার ধর্ম কী, জাতি কী, কী বিক্রি হবে, কে কী খাবে-এসব নিয়ে শুধু বিভাজন করতে চাইবে।
গেরুয়া শিবিরের ডবল ইঞ্জিন সরকারের তত্ত্বের কড়া সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, বিজেপি শাসিত রাজ্যে নারী ও শিশু কল্যাণ, নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলা হয় না। মহিলাদের দমিয়ে রাখা হয়। নারীদের উপর অত্যাচারও ওই সমস্ত রাজ্যে বেশি হয়। স্বাস্থ্য পরিষেবার দিক থেকেও তারা বাংলার তুলনায় অনেক পিছিয়ে। তারপরেও ওই সমস্ত রাজ্যের সরকারের প্রতিই কেন্দ্রের নজর বেশি। বিজেপি শাসিত রাজ্যে যে কোনও বিপর্যয়কে জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করবে। কিন্তু, বাংলায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে তা ঘোষণা হবে না। কেন এই বঞ্চনা?
এদিন বহরমপুরের পঞ্চাননতলায় জেলা পরিষদের অডিটোরিয়ামে প্রোগ্রেসিভ হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন মন্ত্রী। সেখানে কেন্দ্রের পাশাপাশি এরাজ্যের বিজেপি নেতাদেরও তিনি সমালোচনা করেন। মন্ত্রী বলেন, পদ্ম শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এরাজ্যের বিজেপি নেতাদের উপর ভরসা করে না। নিচুস্তরে বিজেপির যেমন কোনও নেতৃত্ব তৈরি হয়নি, তেমনই সংগঠনও নেই।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ছাড়াও জেলা পরিষদের সভাধিপতি রুবিয়া সুলতানা, বিধায়ক অপূর্ব সরকার, যুব তৃণমূলের সভাপতি ভীষ্মদেব কর্মকার, মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল অমিতকুমার দাঁ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অপূর্ববাবু বলেন, রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা কী ছিল আর কী হয়েছে, সেটা সবাই জানেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা সবাই এই অ্যাসোসিয়েশনে থাকবেন। যারা কুৎসা বা বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন।
মন্ত্রী শশী পাঁজা নাম না করে আর জি করের ঘটনা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের বলেন, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার পর স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জায়গায় নানা অভিসন্ধি চলে। তবে আপনাদের প্ররোচনায় পা না দিয়ে পরিষেবা চালু রাখতে হবে। ২০১১ সালের আগে রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার কী হাল ছিল-তা আপনারা ভালো বলতে পারবেন। আমাদের একটিই লবি, সেটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লবি। কেউ বিরোধিতা করার মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করা। যারা দিদির বিরুদ্ধে কুৎসা করে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে হবে। মমতা দিদিকে নিয়েই আমরা অহংকার করব, নিজেদের নিয়ে নয়। শুধু যেখানে প্রতিবাদ করা দরকার, উগ্রতা দেখানো দরকার, সেখানেই তা দেখাতে হবে। -নিজস্ব চিত্র