• বিএলও-র দায়িত্ব: রেহাই চেয়ে আবেদন শিক্ষকদের, রানাঘাটে সমস্যা থাকলে শিক্ষাদপ্তরে আবেদন করতে হবে
    বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: বিএলও বা বুথ লেভেল অফিসারের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদনের হিড়িক পড়ে গিয়েছে মহকুমার নির্বাচনী বিভাগগুলিতে।।কিন্তু নির্বাচন কমিশনের বেঁধে দেওয়া নিয়ম থেকে আবেদনকারীদের অব্যাহতি দেওয়া মোটেই সহজ নয় সরকারি কর্তাদের পক্ষে। 

    আগে বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও পদগুলিতে আশাকর্মী অথবা চুক্তিভিত্তিক সরকারি কর্মীদের নিয়োগ করা যেত। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী এবার থেকে এই দায়িত্ব দিতে হবে ন্যূনতম গ্রুপ সি-তে কর্মরত কোনও সরকারি কর্মীকে। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম পছন্দ স্কুল শিক্ষক। কোনও কারণে সংশ্লিষ্ট বুথে রাজ্য অথবা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী না পাওয়া গেলে তখন চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের আলাদা পদ্ধতি মেনে নিয়োগ করতে হবে। এই মুহূর্তে রানাঘাট উত্তর-পূর্ব বিধানসভায় ২৮২টি, দক্ষিণে ৩০৮টি, উত্তর-পশ্চিমে ২৯০টি, শান্তিপুরে ২৬৫টি এবং কৃষ্ণগঞ্জে ২৯২টি বুথ মিলিয়ে মোট ১৪৯২টি বুথ রয়েছে। এই সমস্ত বুথে বিএলও নিয়োগ করতে জেলার স্কুল শিক্ষাদপ্তর শিক্ষকদেরতালিকা পাঠিয়ে দিয়েছে। সেইমতো বিভিন্ন জায়গায় স্কুল শিক্ষকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভোটার তালিকায় নাম তোলা এবং অন্যান্য কাজ করতে হবে তাঁদের। পরবর্তীতে নাম নিয়ে কোনও সমস্যা হলে দায় বর্তাবে সংশ্লিষ্ট বিএলও-র উপরেও। কিন্তু স্কুল শিক্ষকদের একাংশএই বাড়তি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে নিয়মিত মহকুমার নির্বাচনী বিভাগগুলির দ্বারস্থ হচ্ছেন। আধিকারিকদের প্রতিদিন সেই সমস্ত শিক্ষকদের বোঝাতে হচ্ছে, তাঁদের হাতে অব্যাহতি দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাঁরা নির্দেশ পালন করছেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভিড় কমছে না। উল্টে প্রতিদিন একাধিকবার একই কথা বলতে বলতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন কর্তারা। যেমন গত সপ্তাহেই রানাঘাট মহকুমার এক কর্তার ঘরে দুই দিনে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে কুড়িটির বেশি! কী কী কারণ দেখানো হচ্ছে? সূত্রের খবর, কেউ বলছেন শরীর খারাপ তাই বিএলও-র বাড়তি দায়িত্ব নেওয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়। আবার কেউ বলছেন, ‹স্কুল থেকে আমার অনেক দূরে বাড়ি। দেখুন না যদি আমার নামটা সরিয়ে দেওয়া যায়।› কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, স্কুলের ৮ কিলোমিটারের মধ্যেই থাকার কথা শিক্ষকদের। দূরে বাড়ি হলে পড়তে হতে পারে সার্ভিস রুলের কোপে। তাই দূরে বাড়ির অজুহাত থেকে পিছিয়ে আসছেন অনেকেই। এমনকীরেহাই পেতে ‹মন খারাপ›-এর মতোঅজুহাতও দিচ্ছেন অনেক শিক্ষক।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলার নির্বাচনী বিভাগের এক পদস্থ কর্তা বলেন, প্রতিদিন কেউ না কেউ আসছেন নিজের নাম তালিকা থেকে সরানোর জন্য আবেদন নিয়ে। কিন্তু সেটা যে আমাদের হাতে নেই তা বোঝাতেই পারছি না। প্রতিদিন একই কথা বলতে বলতে আমরাও হয়রান হয়ে যাচ্ছি। যদি কারও যথাযথ সমস্যা থাকে তাহলে স্কুল শিক্ষাদপ্তরের কাছে তাঁকে আবেদন করতে হবে। সেখান থেকে বিকল্প নাম এলে তবেই আমরা কিছু করতে পারব।
  • Link to this news (বর্তমান)