মুরুটিয়ায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়ার মাঝে গেটের দাবি
বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৫
সংবাদদাতা, করিমপুর: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ চলছে। সেই বেড়ার মাঝে একটি গেট করার দাবিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি লিখলেন মুরুটিয়ার শিকারপুর সীমান্তের বাসিন্দারা। জানা গিয়েছে, করিমপুর-১ ব্লক অফিসের পাশে লাগোয়া নদী বরাবর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে রয়েছে শিকারপুর, বারুইপাড়া ও দহখোলা গ্রাম। এতদিন এখানে এই নদীই সীমানা নির্ধারণ করত। এখানে প্রায় দেড় কিলোমিটার সীমান্ত খোলা অবস্থায় ছিল। মাস ছয়েক আগে জমি জট কাটিয়ে এখানে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়। আর তখন থেকেই এই বেড়ার মাঝে একটি গেটের দাবি জানান এলাকার লোকজন। সেই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, তারই মাঝে একটি গেট তৈরি নিয়ে অনড় ভারতীয় সীমান্তের বাসিন্দারা।
বারুইপাড়া গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, এই সীমান্ত বরাবর মাথাভাঙা নদী বয়ে গিয়েছে। এই নদী থেকে প্রায় ১০০ বছর থেকে এলাকার মানুষ নানা কাজে নদীর জল ব্যবহার করে আসছেন। এমনকী একটি শ্মশানও রয়েছে। যে কারণে বহুদিন আগে থেকে স্নান, জমির সেচ ছাড়াও বিভিন্ন কাজে এলাকার মানুষ এই নদীর উপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে গ্রীষ্মের সময় জলস্তর নেমে যাওয়ায় কোনও বাড়ির টিউবওয়েলে জল ওঠে না। তখন সবাইকে এই নদীতেই যেতে হয়। এখন কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে। নদীতে নামার কোনও গেট রাখা হচ্ছে না। অথচ মানুষের যাতায়াতের কিংবা চাষবাসের সুবিধার জন্য অন্যান্য সব জায়গায় কাঁটাতারের বেড়ার মাঝে গেট রাখা রাখা হয়েছে। শিকারপুরের বাসিন্দা অপূর্ব ঘোষ বলেন, গ্রামবাসীদের দাবির কথা জানিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে বেশ কয়েকবার চিঠি করা হয়েছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের দাবি মানা হয়নি। যার জন্য এলাকার মানুষ খুব চিন্তার মধ্যে পড়েছেন।
শিকারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তপন রায় বলেন, গ্রামের পাশেই ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত রেখা বরাবর মাথাভাঙা নদী। এই নদীর জল বিভিন্ন কাজে গ্রামের মানুষ ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হলেও কোথাও কোন গেট রাখা হচ্ছে না। গ্রামবাসীদের দাবি নিয়ে আমরাও সংশ্লিষ্ট বিভাগে জানিয়েছি।
যদিও বিএসএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিকারপুর এলাকার ওই অংশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়াকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের সঙ্গে মতবিরোধ হয়েছিল। দুই দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের বৈঠকের পরই কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়। বেড়ার মাঝে গেট তৈরি করার কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি। এই বিষয়ে সমস্ত সিদ্ধান্ত দিল্লি থেকে নেওয়া হয়েছে। এখানে দুই কাঁটাতারের বদলে এখানে এক তারের বেড়া দেওয়া হচ্ছে। যেখানে একতারের বেড়া দেওয়া হয়, সেখানে কোনও গেট রাখার নিয়ম নেই।