শ্যামলেন্দু গোস্বামী , বারাসত: দীর্ঘদিন ধরে ‘অভিভাবকহীন’ বারাসত ২ নং ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, এখানে আপাতত তৃণমূলের কোনও ব্লক সভাপতি নেই। স্বভাবতই দলের অন্দরে এই পদের দাবিদার অনেক। পদ হাসিলের জন্য প্রত্যেকেই তাঁদের অনুগামী মহলকে নামিয়ে দিয়েছেন ময়দানে। নিজেরা কেউ জেলার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীর দুয়ারে গিয়ে হত্যে দিয়ে পড়ে আছেন, কেউ আবার দরবার করছেন বিধায়কের বাড়িতে। এখানেই থেমে না থেকে পদের দাবিদাররা নিজেকে যথেষ্ট ‘লড়াকু’ ও ‘প্রভাবশালী’ প্রমাণ করতে লম্বাচওড়া পোস্ট করে চলেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই সব পোস্টে কেউ তুলে ধরছেন দলের সুপ্রিমো তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত স্তরের পরিচিতির কথা। ফলাও করে লিখেছেন, ‘দিদি ব্যক্তিগতভাবে চেনেন আমাকে’। কেউ আবার লড়াকু মানসিকতা আর দলের প্রতি দীর্ঘ আনুগত্যের প্রমাণ দিতে লিখেছেন, ‘বামেদের সঙ্গে লড়াই করেছি।’ কেউ কেউ আবার স্থানীয় নেতা-মন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার নথি ও তথ্য তুলে ধরছেন। নেতাদের এমন সব ‘বায়োডেটা’ দেখে চক্ষু চড়কগাছ অনেকের! বারাসত ২ নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন শম্ভু ঘোষ। কয়েকমাস আগে তাঁর মৃত্যু হয়। এমনিতেই রাজনৈতিকভাবে অন্যরকম চরিত্র রয়েছে বারাসতের এই ব্লকের। এই ব্লকের মধ্যে রয়েছে মধ্যমগ্রাম ও হাড়োয়া বিধানসভার অংশ। তৃণমূলের বারাসত ও বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত এই ব্লক। ২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ব্লকে সভাপতি হওয়ার জন্য লম্বা তালিকা জমা পড়েছে। মাসখানেক ধরে হয়েছে সার্ভে। এই আবহে তৃণমূল নেতাদের একের পর এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে বারাসতজুড়ে। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশ সফল করতে স্থানীয় স্তরে দল যেসব কর্মসূচি নিচ্ছে, সেখানে ক্ষমতা প্রদর্শন করছেন কয়েকজন নেতা। একটাই লক্ষ্য, ব্লক সভাপতির দায়িত্ব। এই অবস্থায় শনিবার বারাসত ২ নং ব্লকের শাসনে ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিসভায় ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন মধ্যমগ্রামের বিধায়ক তথা মন্ত্রী রথীন ঘোষ। বাম আমলে শাসন এলাকায় তৃণমূলের লড়াইয়ের কথা স্মরণ করিয়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার বার্তা দেন তিনি।