নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: অফিসঘর নাকি বাথরুম, হঠাৎ করে তা দেখে বোঝা দায়! মেঝেতে রীতিমতো পায়ের পাতা ডোবানো জল জমে। কারণ ছাদের ফাটল দিয়ে বৃষ্টির জল পড়ছে টপাটপ। এক কর্মী ‘ওয়াইপার’ দিয়ে মাঝেমধ্যেই সেই জমা জল সাফ করছেন। কারণ সেই ছাদের নীচে অফিসের ভিতরেই রয়েছে কম্পিউটার সহ বিভিন্ন মেশিন। রয়েছে বিদ্যুতের সংযোগও। তাই বিপত্তি এড়াতে পলিথিন টাঙিয়েই সাধারণ গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়া চলছে। এমন চিত্র দেখা গেল বসিরহাটের ভেবিয়া পোস্ট অফিসে।
বসিরহাটের একেবারেই শেষ প্রান্ত বলে পরিচিত ভেবিয়া। প্রত্যন্ত এই গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দারা কষ্টার্জিত টাকা রাখেন সেখানেই। কারণ এই এলাকায় নেই তেমন আর কোনও বড় ব্যাঙ্ক। কিন্তু বর্তমানে একেবারেই জরাজীর্ণ অবস্থাতে পড়ে রয়েছে এই পোস্ট অফিসটি। ছাদ নিয়ে টপটপ করে পড়ছে বৃষ্টির জল। পাশাপাশি পোস্ট অফিসের সামনেও অল্প বৃষ্টিতেই জমে যাচ্ছে জল। এমন অবস্থায় কম্পিউটার সহ প্রয়োজনীয় নথিগুলিকে বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে পোস্ট অফিসের কর্মীরাই ছাদের তলায় টাঙিয়ে দিয়েছেন ত্রিপল। কিন্তু ভারী বৃষ্টি সেই ত্রিপল মানে না। ত্রিপল উপচে জল পড়তে থাকে অফিসের ভিতরে। তখন কর্মীরাই সেই জল পরিষ্কার করেন। স্বাভাবিকভাবে বর্ষায় পরিষেবা দিতে গিয়ে এমন তীব্র সমস্যায় পড়তে হচ্ছে কর্মীদের। আর এই পোস্ট অফিসে এসে কার্যত ভিজে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে গ্রাহকদেরও। এমন ভগ্নদশার কারণে অফিসের কাজের গতিও অনেকটাই কমে যাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে পোস্ট অফিসের অ্যাসিস্ট্যান্ট পোস্টমাস্টার সমীরণ মণ্ডল বলেন, মানুষকে পরিষেবা দিতে গিয়ে ত্রিপল টাঙানো হয়েছে। তাও বৃষ্টিতে জল মেঝেতে পড়ে। আমরাই জল পরিষ্কার করে মানুষকে পরিষেবা দিই। অফিস ভবন নতুন করে তৈরি হলে ভালো হয়। এই অবস্থায় রোজ কাজ করাও অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে যাচ্ছে। পরিষেবা স্বাভাবিক রাখতে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান একান্ত প্রয়োজন।
এক গ্রাহক রবীন পাল বলেন, এই পোস্ট অফিসই আমাদের ভরসা। কিন্তু এর অবস্থা একেবারেই বেহাল। বর্ষার সময় ওই পোস্ট অফিসে গেলে বিপদের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। কারণ ভিতরে জমা জল থেকে শর্ট সার্কিটের ঝুঁকি থেকে যায়। অনেকদিন ধরে এই অবস্থাতে চললেও কারও হুঁশ নেই। আমরা চাই, এনিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।