রাস্তা মেরামত হবে কোটি টাকায়, প্রশ্ন উঠছে কাজের স্থায়িত্ব নিয়ে
আনন্দবাজার | ১৪ জুলাই ২০২৫
জলের পাইপ বসানোর জন্য রাস্তা খোঁড়া হয়েছে। ফলে সেই রাস্তার সংস্কার করতেই হবে। তা-ও আবার একটু-আধটু জায়গা নয়। দৈর্ঘ্যে প্রায় ২৩০০ মিটার এবং মোট এলাকা প্রায় ৫৩৫০ বর্গমিটার। সেই রাস্তার সংস্কারেই কলকাতা পুরসভা খরচ করতে চলেছে প্রায় ১.২ কোটি টাকা।
পুরসভা সূত্রের খবর, পানীয় জল সরবরাহ দফতরের পাইপ বসানোর জন্য বিডন স্ট্রিট, নিমতলা ঘাট স্ট্রিট এবং জোড়াবাগান স্ট্রিটের একাংশে খোঁড়াখুঁড়ি করা হয়েছিল। তা সারাতেই সংস্কার করা হবে। এই প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯৮,০৩,৯৮৩.০১ টাকা। তবে প্রকল্পের অনুমোদিত খরচ ১,২৮,৮৪,৬০৩.০১ টাকা। আশ্চর্যজনক ভাবে এই বিশাল প্রকল্পে কোনও কনটিনজেন্সি অর্থাৎ, অতিরিক্ত খরচের জন্য সংরক্ষিত অর্থ রাখা হয়নি, যা সাধারণত এমন পরিকাঠামো প্রকল্পে দেখা যায়। ফলে প্রশ্ন, কোনও কনটিনজেন্সি না রেখে প্রকল্প শুরু করলে ভবিষ্যতে খরচ বাড়লে তার দায় কে নেবে? তবে তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
পুর আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, দরপত্র ডাকা হয়েছিল গত ৬ ও ১৩ মার্চ। তিনটি সংস্থা অংশ নিয়েছিল দরপত্রে। ১২ জুন দরপত্র কমিটি একটি সংস্থাকেই বেছে নেওয়ার সুপারিশ করে। সংশ্লিষ্ট দফতরের ছাড়পত্র পাওয়ার পরে অর্থ দফতরের ছাড়পত্র আসে ১০ জুন। তার মধ্যেই রাজ্য নগরোন্নয়ন ও পুর বিষয়ক দফতরের তরফে অর্থ বরাদ্দের চিঠি আসে। আপাতত মেয়র পরিষদের বৈঠকে প্রস্তাবটি পাশ হয়েছে।
তবে রাস্তা সারাই হলেও তার স্থায়িত্ব কত দিন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। কারণ, সম্প্রতি পুর কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন এক রাস্তা সারানোর, যা একাধিক সারাইয়ের ফলে উঁচু-নিচু হয়ে গিয়েছে। ফলে রাস্তা সমতল করতে রীতিমতো দরপত্র ডেকে সংস্থা নিয়োগ করতে হয়েছে। বরাদ্দ করতে হয়েছে প্রায় দু’কোটি টাকা। কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, ই এম বাইপাসের অজয়নগর ফার্স্ট রোড থেকে বাঘা যতীন উড়ালপুলের পূর্বাংশ পর্যন্ত রাস্তায় সেই মেরামতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পুর আধিকারিকদের একাংশ জানিয়েছেন, দিনের পর দিন চলেছে সাময়িক ভাবে সংশ্লিষ্ট রাস্তার খানাখন্দ ভরাটের কাজ। তারই ফলে রাস্তা এখন ঢেউ খেলানো, অসমান। ফলে যাতায়াতে সমস্যা বাড়ার পাশাপাশি, তৈরি হয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও। গাড়ির চাকা পড়ছে এক এক সময়ে এক এক উচ্চতায়, যার জেরে যানবাহনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। বিশেষ করে বৃষ্টি বা রাতের অন্ধকারে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হচ্ছে। সে কারণেই এই রাস্তা মেরামতের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।