দামের কারণেই দেশে সোনার জল করা রুপোর গয়নার চাহিদা বাড়ছে, দাবি রিপোর্টে
বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সোনার দাম আকাশ ছুঁয়েছে। পাল্লা দিয়ে দাম বাড়ছে রুপোরও। কিন্তু সোনার দামের তুলনায় রুপোর দাম এখনও অনেকটাই আয়ত্তের মধ্যে। সেই কারণেই ক্রেতাদের একটা বড় অংশ ফের ঝুঁকছেন রুপোর উপর সোনার জল করা গয়নায়। দামী ধাতুগুলির বাজারদর বিশ্লেষণকারী একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এমনই দাবি করেছে। তাদের বক্তব্য, ভারতে যেমন রুপোর আমদানি বেড়েছে, তেমনই সোনার জলের গয়নার চাহিদাও বেড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ। বর্তমানে কলকাতাসহ দেশের সর্বত্রই সোনার ১০ গ্রামের দাম এক লক্ষ টাকার কাছাকাছি। তেমনই রুপোর কেজি প্রতি দরও লাখ টাকা ছাড়িয়েছে বেশ কিছুদিন। ওই আন্তর্জতিক সংস্থ দাবি করেছে, গত তিনবছরে ভারতে সোনার দাম বেড়েছে ৬১ শতাংশ। কেন্দ্রীয় সরকার আমদানি শুল্ক ৯ শতাংশ কমিয়েও তাতে রাশ টানতে পারেনি। অথচ ওই তিনবছরে ভারতীয়দের আয় বেড়েছে মাত্র ১৯ শতাংশ হারে। এদিকে, ২০০৭ সালে যেখানে গৃহস্থের সঞ্চয়ের হার ছিল প্রায় ৩৭ শতাংশ, তা ২০২৪ সালে নেমে এসেছে ৩০.৭ শতাংশে। অর্থাৎ সাধারণ মানুষের খরচ বেড়েছে। এক্ষেত্রে সোনার বদলে রুপোর দিকে ঝোঁকার প্রবণতাও বেড়েছে, দাবি সংস্থাটির। তথ্য বলছে, দেশে যেটুকু সোনা বিক্রি হয়, তার প্রায় ৫৫ শতাংশ দখল করে রাখে বিবাহকেন্দ্রিক অনুষ্ঠান। বাকিটা সাধারণ মানুষ উৎসব ও অন্যান্য প্রয়োজনে কেনেন। বর্তমানে এই ট্রেন্ড কিছুটা বদলেছে বলে দাবি করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। তাদের বক্তব্য, সোনার জল করা রুপোর গয়না বিক্রি বেড়েছে অন্তত ২০ শতাংশ। বিশেষত, বিয়ের আগে এবং বিয়ের পরের যে ঘরোয়া অনুষ্ঠানগুলি থাকে, সেখানে ওই ধরনের গয়না পরার প্রচলন বাড়ছে ভারতে। পাঁচ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার বাজেটে দিব্যি সেই গয়না কিনছেন ক্রেতারা, দাবি করেছে রিপোর্টটি। তাদের বক্তব্য, নয়া প্রজন্মের ক্রেতারা সাজগোজের জন্য সোনা কেনার বদলে বিদেশ ভ্রমণ, প্রযুক্তি এবং ফ্যাশনে বেশি পয়সা খরচ করছেন। তাই তাঁদের কাছে সাজের হাতিয়ার হয়ে উঠছে সোনার জল করা গয়না। দেশে রুপোর আমদানিও বেড়েছে অনেকটাই। গত মে মাসে রুপো আমদানি হয়েছে ৫৪৪ টন। বৃদ্ধির হার গতবছর মে মাসের তুলনায় ৪৩১ শতাংশ বেশি।
বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির সম্পাদক টগরচন্দ্র পোদ্দারের কথায়, পশ্চিমবঙ্গে সোনার জলের রুপোর গয়নার বিক্রি ২০ শতাংশ না-হলেও, ১০ শতাংশ বেড়েছে। সেই বিক্রিবাটা যে প্রাক-বিবাহ এবং বিবাহ-পরবর্তী উৎসবের জন্য, তা মেনে নিয়েছেন তিনি। বলেন, বর্তমানে বাজেট কমাতে রুপোর পাশাপাশি ২২ ক্যারেট সোনার বিকল্প হয়ে উঠছে ১৪ বা ১৮ ক্যারেট সোনা। তার বিক্রি অনেকটাই বেড়েছে সম্প্রতি, দাবি করেছেন তিনি।