কলকাতা পুলিশের মানবিক রূপ! মৃত্যুর মুখ থেকে ছয় নাবালককে উদ্ধার, ফিরে পেল পরিবার ...
আজকাল | ১৪ জুলাই ২০২৫
আজকাল ওয়েবডেস্ক: শহরের বুকে আবারও একবার মানবিকতার দৃষ্টান্ত কলকাতা পুলিশের। হুগলি নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল ৬ নাবালক।কেবলমাত্র একটি মোটা থার্মোকলের টুকরো ধরে তারা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিল। সেই মুহূর্তে নদীতে টহলরত এএসআই মানিক দে-র দ্রুত প্রতিক্রিয়া এবং সাহসিকতায় অল্পের জন্য রক্ষা পেল তাদের প্রাণ।
১৩ জুলাই রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে৷ আনুমানিক পৌঁনে তিনটে নাগাদ কলকাতার এনএস ডকের কাছাকাছি হুগলি নদীতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে। টহলের দায়িত্বে থাকা এএসআই মানিক দে আচমকা দেখতে পান ৬ জন কিশোর নদীর প্রবল স্রোতের মধ্যে একটি থার্মোকলের ভাসমান টুকরো ধরে ভেসে যাচ্ছে। তৎক্ষণাৎ সংকটের আশঙ্কায় তিনি উদ্ধারে নেমে যান। মুহূর্তের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নিলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে ভেবে কোনওরকম দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে লঞ্চের কর্মীদের খবর দেন। উদ্ধার অভিযান শুরু করেন এবং আনুমানিক তিনটে নাগাদ সবাইকে জীবিত উদ্ধার করতে সক্ষম হন।
উদ্ধার পরবর্তী জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, ছেলেগুলি সকলেই মেটিয়াব্রুজ এলাকার বাসিন্দা। তারা আজ সকালে বেছালি ঘাটে স্নান করতে এসেছিল। স্নান করার সময় তাদের মধ্যে একজন আচমকা নদীর স্রোতে ভেসে যেতে শুরু করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে বাকি পাঁচজন একটি থার্মোকলের ব্যাগ নিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তারাও স্রোতের টানে ভেসে যেতে থাকে এবং ড্রিফট করে ক্রমাগত উত্তরের দিকে চলে যায়। ঘটনার জেরে তারা চরম আতঙ্কে ছিল বলে জানা গিয়েছে। একমাত্র থার্মোকলের ভাসমান টুকরোটি আঁকড়ে ধরে কোনোরকমে টিকে ছিল।
উদ্ধারের পর বালকদের আরটিপি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। এবং আইন অনুযায়ী ওয়েপিপিএস (WPPS) অফিসে যোগাযোগ করে একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারকে ঘটনাস্থলে পাঠানোর অনুরোধ করা হয়। এরপর WPPS-এর তরফ থেকে সংশ্লিষ্ট ছেলেদের অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিতভাবে তাঁদের কাছে তাঁদের সন্তান ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ সামান্য ঘুমের জায়গা নিয়ে বিবাদে এ কী পরিণতি? মাত্র ১৩ বছর বয়সে ছাত্রের সঙ্গে যা ঘটল, শুনলে শিউরে উঠবেন আপনিও
গোটা প্রক্রিয়াজুড়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছেলেদের প্রতি সর্বোচ্চ সংবেদনশীলতা ও মানবিকতা প্রদর্শন করা হয়।ঘটনাটির খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাবাসী ও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রশংসা শুরু হয়। অনেকেই এএসআই মানিক দে-র সাহসিকতা, উপস্থিত বুদ্ধি এবং কর্তব্যপরায়ণতার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, পুলিশের কাজ শুধু আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করা নয়, মানবজীবন রক্ষায়ও তারা অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। কলকাতা পুলিশের এই তৎপরতা ও মানবিক পদক্ষেপ আজ ছয়টি তরতাজা প্রাণকে ফিরিয়ে দিল জীবনের মূল স্রোতে।