দেব গোস্বামী, বোলপুর: বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে খুন তৃণমূল নেতা, এমনই প্রাথমিক দাবি পুলিশের। কেন তিনি গভীর রাতে ফোনে সাড়া দিলেন। তাঁকে কি প্রায়ই ডাকা হত? কে ফোন করেছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ। আমোদপুরের শ্রীনিধিপুর অঞ্চল সভাপতি পীযূষ ঘোষের খুনের তদন্তে নেমে এখনও অনেক প্রশ্নের সদুত্তর পায়নি পুলিশ। কোপাই নদীর পাড় জুড়েই চলে দেদার বালি লুট। অভিযোগ, সেই বালি কারবারিদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই তৃণমূল নেতা পীযূষ। সেই কাজে রাতবিরেতে তিন বেরতেন বলে খবর। পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, পীযূষ বেশ কিছুদিন ধরেই জড়িয়ে ছিলেন পরকীয়ায়। ফলে খুনের কারণ নিয়ে ধন্দে পুলিশ।
যে জায়গায় খুনের ঘটনা ঘটেছে, সেখানে একটাই মাত্র বাড়ি রয়েছে। সেটি একজন মহিলার। ঘটনাচক্রে রবিবার সকালেই তৃণমূল নেতার খুনের ঘটনায় ওই মহিলাকে আটক করেছে পুলিশ। তারপরেই জেরা শুরু করে। তিনিও তৃণমূলের কর্মী। রাজনীতির সূত্রে পীযূষের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল তাঁর। একইসঙ্গে মহিলা-সহ আরও দু’জনকে আটক করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও এখনও গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি। আটক হওয়া ওই মহিলা দাবি করেন, তিনি পীযূষকে ফোন করেনি। তবে গভীর রাতে পরিচিত কার ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন? সেই উত্তর খুঁজছে পুলিশ। মৃতদেহের পকেট থেকে উদ্ধার হওয়া মোবাইলের কললিস্ট দেখে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। কোনারপুর গ্রামে শোকস্তব্ধ পীযূষ ঘোষের আত্মীয়রা।
সেই মহিলার দোরগোড়া থেকেই উদ্ধার হয় রক্তাক্ত দেহ। তবে পরিবারের স্পষ্ট দাবি, ‘রাজনৈতিক কারণেই খুন হতে হয়েছে পীযূষকে।সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, “গভীর রাতে তৃণমূল নেতা কেন খুন হলেন, পুলিশ তদন্ত করে দেখুন, কারা জড়িত রয়েছে।” বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল বলেন, “যেকোনো মৃত্যুর দুঃখজনক। তবে গভীর রাতে টাকার ভাগ বাটোয়ারা করতে গিয়েই খুন হতে হয়েছে তৃণমূল নেতাকে।” যদিও তৃণমূলের লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ বলেন, “যে অস্ত্র দিয়ে ওঁকে খুন করা হয়েছে, সেটা কোথা থেকে কীভাবে এল, কারা নিয়ে এল, তার তদন্ত হোক। পুলিশের উপর আমাদের আস্থা আছে। পুলিশ নিশ্চয়ই তদন্ত করে বার করবে। এটা দুষ্কৃতীদের কাজ। কেন খুন করা হল, কারা দুষ্কৃতী পাঠাল, তদন্ত হলেই জানা যাবে।”