বাংলায় বাইরের দেড় কোটি মানুষ থাকেন, তাঁরা তো হেনস্থা হন না! ভিন্রাজ্যে বাঙালি-হেনস্থায় ক্ষুব্ধ মমতা
আনন্দবাজার | ১৪ জুলাই ২০২৫
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের হেনস্থার অভিযোগ নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকেও এ নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, মমতা বৈঠকে বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে ভিন্রাজ্যের প্রায় দেড় কোটি মানুষ বসবাস করছেন। এখানেই তাঁদের রুজিরুটি। তাঁদের কখনও হেনস্থা হতে হয় না। কিন্তু বাংলার ২২ লক্ষ মানুষ ভিন্রাজ্যে কেন হেনস্থার শিকার হচ্ছেন?
বাংলাভাষী হলেই বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে ওড়িশা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে বাঙালিদের আটক করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে দলগত ভাবে প্রতিবাদ করছে মমতার দল তৃণমূল। পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁদের হেনস্থা নিয়ে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা হয়। বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের উপর ‘আক্রমণের’ ঘটনা নিয়ে সবিস্তার তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। জানা যাচ্ছে, গত কয়েক দিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত বাঙালি-হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো তুলে ধরে আলোচনা করেন মমতা। বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি।
অন্য দিকে, বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও বাংলা থেকে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করে রাখা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এ নিয়ে দিল্লির জয়হিন্দ কলোনিতে সোমবার থেকে ধর্নায় বসে তৃণমূল। মঙ্গলবার বিকেল ৩টে পর্যন্ত সেখানে ধর্না দেবেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন, সাগরিকা ঘোষ, সুখেন্দুশেখর রায়, সাকেত গোখলেরা। দোলা জানান, ওই এলাকার কলোনির বাংলাভাষী বাসিন্দারাও তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। এ ছাড়া আগামী বুধবার, ১৬ জুলাই কলকাতার রাস্তায় প্রতিবাদ মিছিলের পথে নামবেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। ওই দিন কলেজ স্কোয়্যার থেকে প্রতিবাদ মিছিল হবে। কলকাতা ছাড়াও হাওড়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে শাসকদলের নেতা-কর্মী এবং সমর্থকেরা মিছিলে যোগ দেবেন।
উল্লেখ্য, বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের ওড়িশায় আটকে রাখার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাই কোর্টে হিবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের হয়েছে। এ নিয়ে আদালত প্রশ্ন করেছে, কেন বাংলার পরিযায়ী শ্রমিকদের আটকে রাখা হয়েছে? কিসের ভিত্তিতে আটক করা হয়েছে? কোনও এফআইআর দায়ের হয়েছে কি না? আটক করার পরে ওই পরিযায়ীদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করা হয়েছে? এখন তাঁরা কোথায় রয়েছেন? আদালত জানায়, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে এই প্রশ্নগুলি নিয়ে ওড়িশার মুখ্যসচিবের সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে চায় আদালত।