• DVC জল ছাড়ায় বন্যার ভ্রুকুটি খানাকুলে
    এই সময় | ১৫ জুলাই ২০২৫
  • এই সময়, খানাকুল: অবিরাম বৃষ্টি এবং ডিভিসি’র ছাড়া জলে খানাকুলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুল দু’নম্বর ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০-২২টি গ্রাম ইতিমধ্যেই জলমগ্ন।

    সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত রাজহাটি, মাড়োখানা, পানশিউলি, জগৎপুর, শাবলসিংহপুর, হানুয়া, ঢলডাঙা, জগদীশতলা, সুন্দরপুর গ্রাম। রূপনারায়ণের তীরবর্তী এই সব গ্রামের বাসিন্দারা জলবন্দি হয়ে পড়েছেন।

    রাস্তাঘাট জলে ডুবে থাকায় লোকজন নৌকোয় যাতায়াত করছে। আরও কয়েকদিন এ ভাবে বৃষ্টি চললে এবং ডিভিসি জল ছা়ডার পরিমাণ বা়ডালে পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা গ্রামবাসীদের। বন্যার আশঙ্কায় স্থানীয় ব্লক প্রশাসনকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।

    সেচ দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, লাগাতার বৃষ্টি এবং ডিভিসি নতুন করে জল ছাড়ায় দ্বারকেশ্বর, মুণ্ডেশ্বরী, রূপনারায়ণ নদীর জল বাড়ছে। তার জেরেই নদীবেষ্টিত খানাকুলের নিচু এলাকাগুলিতে জল ঢুকতে শুরু করেছে।

    রাস্তায় জল উঠে যাওয়ায় যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। গত রবিবার থেকে জলমগ্ন গড়েরঘাট আরামবাগ রুট। রাজহাটি–পানশিউলি রোডের আশপাশে বহু গ্রাম জলমগ্ন। রাস্তায় হাঁটু সমান জল। তার উপর দিয়েই যাতায়াত করছেন গ্রামের মানুষজন।

    পানশিউলি-নন্দনপুর পিচ রাস্তার উপরেও জল জমে রয়েছে। শাবলসিংহপুর ফুটবল মাঠে নৌকো চলছে। সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, হুগলি, হাওড়া এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের সীমান্তবর্তী পানশিউলির কাছে মুণ্ডেশ্বরী নদী রূপনারায়ণে এসে মিশেছে।

    ডিভিসির ছাড়া জল মুণ্ডেশ্বরী হয়ে রূপনারায়ণে গিয়ে পড়ছে। গত কয়েক দিনে ডিভিসি দফায় দফায় জল ছাড়ায় রূপনারায়ণের জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। জোয়ারের সময় রূপনারায়ণের জল কূল ছাপিয়ে ঢুকে পড়ছে আশপাশের গ্রামে।

    স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, রাস্তাঘাট প্লাবিত হলেও এখনও বাড়িঘরে জল ঢোকেনি। তবে নদীর জল যে হারে বাড়ছে, তাতে যে কোনও সময় বাড়িঘরে জল ঢুকতে পারে।

    তা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন মির্জা নাজিবুল হক, ঝর্ণা দোলুই, সোনামণি হরিজন, সন্দীপ মাঝিরা। ঝর্ণা দোলুই বলেন, ‘গোটা গ্রাম জলে ভাসছে। মাঠের সমস্ত আনাজপত্র জলে ডুবে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের কোনও লোকজনকে এলাকায় দেখতে পাইনি। সরকার থেকে কোনও ত্রাণও পাঠানো হয়নি।’

    খানাকুল ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রুম্পা মণ্ডল জানান, নদীগুলিতে জল বাড়লেও এখনও ভয়ের কিছু হয়নি। মাড়োখানা, পানশিউলি, হানুয়া, শাবলসিংহপুর, সুন্দরপুর, জগদীশতলা, এই সব গ্রামগুলো খুবই নিচু এলাকা।

    সেজন্য খুব সহজেই রূপনারায়ণ নদীর জোয়ারের জল ঢুকে যায়। আবার ভাটা এলে জল নেমে যায়। তবে বৃষ্টি বাড়লে ভয়ের আছে। ডিভিসি জল ছাড়লে বিপদ হবে। আমরা পঞ্চায়েতগুলোকে সতর্ক থাকতে বলেছি। ত্রাণের মালপত্রও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’

  • Link to this news (এই সময়)