• আজ খুঁটিপুজো, জলমগ্ন শহরে ২১ জুলাইয়ের পার্কিং নিয়ে দুর্ভোগের আশঙ্কা
    আজ তক | ১৫ জুলাই ২০২৫
  • মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে থাকেন, ২১ জুলাইয়ের সঙ্গে বৃষ্টি অঙ্গাঙ্গি ভাবে জড়িত। প্রায় প্রতি বছরই তৃণমূলের শহিদ দিবসে কমবেশি বৃষ্টিপাত হয়। একাধিকবার বৃষ্টিস্নাত ধর্মতলায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে কাকভেজা হয়েও বক্তব্য রাখতে দেখা গিয়েছে দলনেত্রীকে। তাঁর বার্তা শুনকে দূর-দূরান্ত থেকে আসা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরাও বৃষ্টি মাথায় করেই ঠায় দাঁড়িয়ে থেকেছেন। মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে এবারের শহিদ দিবসের মঞ্চ বাঁধার কাজ। কিন্তু পুলিশ-প্রশাসনকে ভাবাচ্ছে কলকাতার জলমগ্ন রাস্তা। 

    মঞ্চ বাঁধা-খুঁটি পুজো
    ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এটাই শেষ শহিদ দিবস তৃণমূলের। ফলে এবারের ২১ জুলাই হতে চলেছে গ্র্যান্ড। মেগা চমকের অপেক্ষায় ঘাসফুল শিবিরের সমর্থকরা। তাই আয়োজনও হচ্ছে বিশাল ভাবে। মঙ্গলবার ঞ্চ বাঁধার কাজ খুঁটিপুজোর মাধ্যমে শুরু হবে। দলের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতারা। দিনভর বৃষ্টি এবং নিম্নচাপের চোখরাঙানির ফলে খুঁটি পুজোর আয়োজন নিয়ে চিন্তা রয়েছে দলের। এদিকে, মঞ্চ বাঁধার কাজও বাধা পেতে পারে এই প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে। ট্র্যাডিশনালি ২১ জুলাই যে ধরনের মঞ্চ তৈরি হয় এবারেও তেমনই মঞ্চ হতে চলেছে বলে দলীয় সূত্রের খবর। ২১ জুলাইয়ের কয়েক দিন আগেই উত্তরবঙ্গ সহ দূরবর্তী জেলা থেকে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা শহরে এসে পৌঁছবেন। কসবার গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম, ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্র থেকে বিধাননগর, নিউ টাউনে এঁদের রাত্রিবাস ও খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হবে।

    পুলিশের দুশ্চিন্তা কীসের?
    প্রতিদিনই কলকাতায় ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী ৭ দিন দুর্যোগ চলবে বঙ্গে। নিম্নচাপের প্রভাবে ২১ জুলাই কলকাতায় হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এমত অবস্থায় ২১ জুলাইয়ের জন্য প্রশাসনিক প্রস্তুতিতে চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। পুলিশের কাছে এখন সবচেয়ে বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্কিং। 

    কলকাতার চতুর্দিক জলমগ্ন। জল জমে রয়েছে ময়দানেও। আর সেখানেই ২১ জুলাইয়ের জন্য শহরে আসা বিশাল সংখ্যক বাস-গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। শহিদ দিবসের অনেক আগে থেকেই জেলা থেকে সাংগঠনিক প্রতিনিধি দল কলকাতায় এসে পৌঁছয়। ময়দানেই গাড়ি-বাস রাখা হয়। কিন্তু জল জমে থাকায় সেই নিয়ে কোনও প্রস্তুতি শুরু করতে পারেনি লালবাজার। 

    জল কাদায় ভর্তি ময়দানে এই মুহূর্তে এত সংখ্যক গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত প্রায় অসম্ভব বলেই মনে করা হচ্ছে। সোমবারের মতো সপ্তাহের প্রথম কর্মব্যস্ত দিনে পড়েছে ২১ জুলাই। এমনিতেই রাস্তা সচল রাখা নিয়ে কার্যত হিমশিম অবস্থা তৈরি হয়, তার মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পার্কিং। 

    সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, লালবাজারের ট্রাফিক বিভাগের মাসিক পর্যালোচনা বৈঠকে ২১ জুলাইয়ের পার্কিংয়ের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনাই হয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, বৃষ্টি কমার পর অন্তত ৭২ ঘণ্টা সময় না পেলে ময়দান মাঠের দুর্বিসহ অবস্থার উন্নতি হবে না। সেক্ষেত্রে সপ্তাহের শেষেও যদি আবহাওয়ার উন্নতি না হয়, তবে ২১ জুলাইয়ের আগে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা নিয়ে বেগ পেতে হবে লালবাজারকে, মনে করা হচ্ছে এমনটাই। 

    সূত্রের খবর, শিয়ালদার দিকে এপিসি রোড, বড়বাজার, পোস্তা, আশুতোষ মুখার্জি রোড, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড, জওহরলাল নেহরু রোডের মতো রাস্তায় বিকল্প পার্কিংয়ের বন্দোবস্ত করার কথাও ভাবনা চিন্তা করছে ট্রাফিক পুলিশ। ২১ জুলাইয়ের আগের রাত থেকেই শহরে পণ্যবাহী গাড়ি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেক্ষেত্রে ট্রাফিকের চাপ কিছুটা কমবে বলেই অনুমান। 

    হাইকোর্টে মামলা
    ২১ জুলাইয়ে সভার জন্য যাতে সাধারণ মানুষকে কোনও দুর্ভোগ পোহাতে না হয় সেই ব্যবস্থা পুলিশকেই করতে হবে বলে জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেছে অল ইন্ডয়া ল'ইয়ার্স ইউনিয়ন। 

     
  • Link to this news (আজ তক)