আন্তর্জাতিক জলসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ! বাংলাদেশে আটক কাকদ্বীপের ৩৪ জন মৎস্যজীবী, পরিবারের কাছে এল ফোন
আনন্দবাজার | ১৫ জুলাই ২০২৫
আন্তর্জাতিক জলসীমান্ত লঙ্ঘনের অভিযোগে সুন্দরবন এলাকার ৩৪ জন মৎস্যজীবীকে আটক করল বাংলাদেশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাঁদের সঙ্গে থাকা দু’টি ট্রলার ‘এফবি ঝড়’ এবং ‘এফবি মঙ্গলচণ্ডী ৩৮’-কে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ থেকে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ওই মৎস্যজীবীরা। বঙ্গোপসাগরের উপর বাংলাদেশের মোংলা বন্দরের কাছে তাঁদের আটক করে বাংলাদেশের নৌবাহিনী।
বাংলাদেশের নৌবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক জলসীমান্ত লঙ্ঘন করে ট্রলারগুলি বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। তার পর গভীর রাতে বাংলাদেশের জলসীমায় মাছ ধরছিলেন আটক মৎস্যজীবীরা। নজরদারির সময় বাংলাদেশের নৌবাহিনীর টহলদারি জাহাজ থেকে ট্রলারগুলির গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছিল। তার পর সেগুলিকে ধাওয়া করে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের নৌবাহিনী। আপাতত ওই দু’টি ট্রলার এবং ৩৪ জন মৎস্যজীবীকে মোংলা বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে বাংলাদেশের স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর। বাংলাদেশের মৎস্য ও নৌপরিবহণ দফতরের তরফে ওই ৩৪ জনের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্য দিকে, মৎস্যজীবীদের আটক হওয়ার খবর পেয়েই চিন্তায় তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা। তাঁদের এক জনের পরিবারের সদস্য বলেন, “শুনেছি বাংলাদেশে আমার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে আমাদের ফোন করেছিল। বলল, আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। ওরা প্রত্যেকে ভাল আছে। তবে যত ক্ষণ না ওরা বাড়ি ফিরছে, চিন্তায় আছি।” আতঙ্ক ছড়িয়েছে কাকদ্বীপ এবং নামখানার উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে। কারণ এই এলাকাগুলি থেকে প্রায় প্রতি দিনই বহু মৎস্যজীবী মাছ ধরার গভীর সমুদ্রে যান।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আটক মৎস্যজীবীদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্যের মৎস্য দফতর। যোগাযোগ রাখা হচ্ছে বাংলাদেশের ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও। তবে বার বার ভারতীয় মৎস্যজীবীদের বাংলাদেশে আটক হওয়ার ঘটনা নিয়ে উপকূল নিরাপত্তা এবং ট্রলারগুলির জিপিএস ব্যবস্থার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সীমান্তবর্তী জলসীমায় মাছ ধরার সময় আরও সতর্ক থাকার বার্তা দিচ্ছেন প্রশাসনিক কর্তারাও।
তবে এই প্রসঙ্গে সুন্দরবন সামুদ্রিক মৎস্যজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের তরফে সতীনাথ পাত্র জানান, আগেও ভারতের বহু ট্রলার বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে পড়েছে। আবার বাংলাদেশের বহু ট্রলারও মাছ ধরতে ধরতে ভারতে চলে এসেছে। কিন্তু আগে বাংলাদেশ এই বিষয়ে অতিসক্রিয় ছিল না বলেই দাবি তাঁর। এই বিষয়ে ভবিষ্যতে ভারতের মৎস্যজীবীদের সতর্ক করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।