• একটানা জল ছাড়ছে ডিভিসি, উপকূলবর্তী এলাকায় আশঙ্কা বাড়ছে বন্যার, আগাম সতর্কতা নিল রাজ্য...
    আজকাল | ১৫ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধার থেকে প্রায় ৪৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে পাঞ্চেত থেকে প্রায় ৩৬ হাজার এবং মাইথন থেকে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। ঝাড়খণ্ডে টানা বৃষ্টির কারণে জলাধারে জলের স্তর বেড়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ডিভিসি সূত্রে জানা গিয়েছে। এই জল দামোদর নদী ধরে পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুর ব্যারেজ হয়ে হাওড়া, হুগলি ও পূর্ব বর্ধমানের দিকে প্রবাহিত হবে। যার ফলে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেচ দপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, বিশেষ করে হুগলির খানাকুল, আরামবাগ এবং হাওড়ার আমতা ও উদয়নারায়ণপুর এলাকার পরিস্থিতি বিপজ্জনক হতে পারে।

    রাজ্য সরকারের সেচ দপ্তর ইতিমধ্যে বাসিন্দাদের সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। দুর্গাপুর ব্যারেজে জলের চাপ বেড়ে চলেছে। সেচ দপ্তরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি অনুযায়ী সেখান থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়ানো হতে পারে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। ডিভিসি সূত্রে আরও জানা গেছে, ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ, ধানবাদ, বোকারো সহ উচ্চ দামোদর উপত্যকায় টানা বৃষ্টির ফলে পাঞ্চেত ও মাইথন জলাধারের জলস্তর অনেকটাই বেড়েছে। সেই অতিরিক্ত জল নিয়ন্ত্রণ করতেই এই জল ছাড়া হয়েছে।

    তবে ডিভিসির এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফের বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, রাজ্য সরকারের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনায় না গিয়েই একতরফাভাবে জল ছাড়া হয়েছে। অতীতেও এই ধরনের আচরণের কড়া সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। তিনি বারবার বলে এসেছেন, কোনও আগাম সতর্কতা ছাড়া ডিভিসির জল ছাড়াই দক্ষিণবঙ্গের বন্যার অন্যতম কারণ। তবে ডিভিসির এক উচ্চপদস্থ কর্তা বিষয়টি নিয়ে সাফাই দিয়ে বলেন, ‘আমরা নিজেরা কোনও সিদ্ধান্ত নিই না। জলাধার থেকে কতটা জল ছাড়া হবে, তা নির্ধারণ করে একটি কমিটি। সেই কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ড সরকারের প্রতিনিধি ছাড়াও ডিভিসি এবং কেন্দ্রীয় জল কমিশনের সদস্যরাও থাকেন। ওই কমিটি জলাধারের স্তর ও বৃষ্টিপাতের হিসাব করে সিদ্ধান্ত জানালে, আমরা শুধু জল ছাড়ার কাজটি করি’।

    এদিকে জল ছাড়ার কারণে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায় বন্যার আশঙ্কা তৈরি হওয়ায় রাজ্য প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ইতিমধ্যেই ১০টি জেলার জন্য ১০ জন দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব নিযুক্ত করেছেন। যাতে পরিস্থিতির ওপর সরাসরি নজর রাখা যায়। হাওড়া, হুগলি এবং পূর্ব বর্ধমান জেলার নিম্নাঞ্চলগুলিতে ত্রাণ এবং উদ্ধারকার্য চালাতে জেলা প্রশাসনকে তৎপর থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। প্রশাসনের তরফে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী মজুত রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনে সেনা মোতায়েনের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে নবান্ন।
  • Link to this news (আজকাল)