আজকাল ওয়েবডেস্ক: অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই ছিঃ ছিঃ রব। গ্রেপ্তার করা হয় চন্দননগরের যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত শিক্ষককে। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে পেশ করে পুলিশ। কিন্তু তার পরেই শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে থানার সামনে ভিড় করতে শুরু করেন পড়ুয়া-অভিভাবকরা। দাবি শিক্ষককে ফাঁসানো হয়েছে। সঙ্গেই দাবি, প্রধান শিক্ষকের সময়ে স্কুলের পঠন পাঠনে উন্নতি হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ ভিত্তিহীন। ঘটনায় শোরগোল চন্দননগরে।
কানাইলাল বিদ্যামন্দির স্কুলের প্রথম শ্রেণীর এক ছাত্রকে গতকাল স্কুল চলাকালীন যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক এক ছাত্রকে দিয়ে আপত্তিকর কাজ করান বলে অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই সপ্তাহের শুরুর দিনেই উত্তাল হয় এলাকা। শুধু অভিযোগ যৌন হেনস্থার নয়, অভিযোগ, হেনস্থার পরে হুমকিও সিয়েছেন শিক্ষক। ওই ছাত্রকে ঘটনা বাড়িতে না বলার জন্যও ভয় দেখান বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন: সকাল থেকে প্রবল বৃষ্টি কলকাতায়, কিছুক্ষণেই আরও বাড়বে দুর্যোগ! টানা তিন দিন ৫ জেলায় ভারী বৃষ্টি, ১৫ জেলায় হলুদ
আর জি কর কাণ্ডে রীতিমতো রাস্তায় নেমে আন্দোলনকারী শিক্ষকের এই ন্যাক্কারজনক কীর্তিতে হতবাক অভিবাবক মহল। চন্দননগর থানায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিত ছাত্রের পরিবার।
ঠিক কী অভিযোগ, ঘটনাটি ঘটেছে চন্দননগর পুরনিগম পরিচালিত কানাইলাল বিদ্যামন্দির স্কুলে সোমবার সকালে। জানা গিয়েছে, স্কুল শুরু পর শ্রেণি কক্ষের মধ্যেই ক্লাস ওয়ানের দুই ছাত্র মারামারি করে। ক্লাস টিচার দিদিমনি দু'জনকে প্রধান শিক্ষকের কাছে নিয়ে যান।
অভিযোগ এরপরই প্রধান শিক্ষক ওই দু'জনের মধ্যে এক ছাত্রকে দিয়ে আপত্তিকর কাজ করান। যৌন নির্যাতন করেন। তারপর ভয় দেখান বাড়িতে কাউকে না বলতে। ছাত্রটির মা তাকে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুলে আসেন। ছুটির পর বাড়ি যাওয়ার পথে ছাত্রটি তার মাকে ঘটনার কথা জানায়। এরপরই বিষয়টি অন্যান্য অভিভাবকরা জানতে পারেন। বিকেলের পর চন্দননগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ছাত্রের পরিবার। দুপুরের পর অভিভাবকদের বিক্ষোভ শুরু হলে উত্তেজনা তৈরি হয়। কানাইলাল স্কুলে পুলিশ পৌঁছায়। পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার করা হয় শিক্ষককে।
চন্দননগরের মেয়র রাম চক্রবর্তী সোমবারেই জানান, কানাইলাল স্কুলে প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ানো হয়। একজনই প্রধান শিক্ষক আছেন স্কুলে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছাত্রদের সঙ্গে অশালীন আচরণের। ঘটনা যদি সত্যি হয় পুলিশ তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নিক। কানাইলাল স্কুল চন্দননগর শহরের অন্যতম একটি নামজাগা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেখানে এই ধরনের ঘটনা অভিপ্রেত নয়।
ডেপুটি মেয়র অমিত আগরওয়াল জানিয়েছেন, এটা অনভিপ্রেত একটা ঘটনা। আর যাই হোক ওই শিক্ষকের থেকে এমনটা আসা করা যায় না। কারণ আর জি কর ঘটনার শুরু থেকেই এই শিক্ষক ছিলেন আন্দোলনের নেতৃত্বে। তাঁর নেতৃত্ত্বে অবস্থান মিছিল ধরনা থেকে শুরু করে অনেক কিছুই হয়েছে চন্দননগর শহরে। দিন রাত চলেছে আন্দোলন। সাধারণ মানুষ তথা চন্দননগর বাসীর কাছে তিনি নিজেকে প্রতিবাদী চরিত্র হিসেবে তুলে ধরেছিলেন। এই আচরণ তাঁর থেকে কখনোই আসা করা যায় না। যায় হোক আইন আইনের রাস্তায় চলবে।
প্রধান শিক্ষক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেননি। অভিভাবকদের দাবি, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের শাস্তি চাই।পুলিশ সূত্রে খবর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও এমন অভিযোগ ছিল। সেই তথ্য পুলিশের কাছে রয়েছে।