• 'আর পারছি না', ঋণের পাহাড় নিয়ে মানসিক চাপ, মা, পোষ্যদের মেরে যুবক যা করলেন
    আজকাল | ১৬ জুলাই ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: জমে গিয়েছিল দেনার পাহাড়। ঋণ শোধ করতে পারছিলেন না দীর্ঘদিন ধরেই। ঋণের বোঝা থেকে বাঁচতে অবশেষে চরম পদক্ষেপ করলেন এক যুবক। যা ঘিরে মর্মান্তিক পরিণতি তাঁর বাড়ির সদস্যেরও। অথচ যুবকের পরিণতিতে হতবাক প্রতিবেশীরা। 

    জানা গেছে, ঋণের বোঝা আর বহন করতে না পেরে মা ও পোষ্য বিদেশি কুকুরদের বিষ খাইয়ে খুন করেন এক যুবক। এরপর নিজের হাতের শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি। এই ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে যুবকের মা ও বাড়ির পোষ্য সারমেয়র। অন্যদিকে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন খোদ যুবক। বর্তমানে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। 

    পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি আসানসোল দক্ষিণ থানার রাসডাঙ্গা সুমথ পল্লি জাহাজ বাড়ির ঘটনা। একটি বাড়িতে থাকতেন ওই যুবক ও তাঁর মা। সঙ্গী ছিল একটি পোষ্য সারমেয়। তাঁদের বাড়ির ভাড়াটেকে জিজ্ঞেসাবাদ করার জন্য আটক করেছে পুলিশ। 

    প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ এটিকে আত্মহত্যার প্রচেষ্টার ঘটনা বলে মনে করছে। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পেরেছে, বাড়ির ভাড়াটের সঙ্গে ঘর কেনাবেচা নিয়ে অর্থনৈতিকভাবে একটা ঝামেলা হয়েছিল অরিন্দম নামের ওই যুবকের। 

    জানা গেছে, অরিন্দমদের অনুমতি ছাড়াই একটা কন্সট্রাকশন করছিলেন অভিযুক্ত ভাড়াটে। তা নিয়েও বিবাদ আরও বাড়ে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। জানা গেছে, যুথিকা দাস ও অরবিন্দ দাসের উপর ঋণের বোঝা ছিল। তাঁরা তাঁদের বাড়িটি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্ধক রেখেছিলেন। 

    আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টিতে তছনছ রাজস্থান, মৃত্যুমিছিল জেলায় জেলায়, নিখোঁজ বহু, স্কুল বন্ধের ঘোষণা

    আত্মহত্যার প্রচেষ্টার আগে তাঁর এক বন্ধুদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে একটি আত্মহত্যার নোট পাঠিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। যেখানে তিনি তিন-চারজনের নাম উল্লেখ করেছেন। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। 

    জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে যুথিকা দাস (৭৫) নামে এক বিধবা মহিলা এবং তাঁর একমাত্র অবিবাহিত ছেলে অরবিন্দ দাস ওরফে পুষান (৪৫) তাঁদের নিজেদের বাড়ির দরজা দীর্ঘক্ষণ ধরে খোলেননি। স্থানীয়দের সন্দেহ হতেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। 

    ঘরের ভিতরে ঢুকে পুলিশ যুথিকা নামের বৃদ্ধাকে তাঁর বিছানায় মৃত অবস্থায় পায়। তাঁর ছেলে পুষানকে অচেতন ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাওয়া যায়। তাঁদের তিনটি পোষা কুকুরও ঘরে মৃত অবস্থায় ছিল বলে জানা গেছে। পুষানকে দ্রুত আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়দের দাবি, ঋণ শোধ করতে না পারার জেরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন যুবক। 

    ডিসিপি সেন্টাল ধ্রুব দাস জানান, একটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ অঞ্চল জেলা হাসপাতালেও পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর জানতে পারা যাবে মৃত্যুর কারণ আর কী কী রয়েছে। ছেলে পুষানের অবস্থা স্থিতিশীল হলেই তাঁকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হবে। আদৌ খুন না আত্মহত্যা, তাও খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। তদন্ত চলছে জোরকদমে।
  • Link to this news (আজকাল)