• তৃণমূল শিক্ষক নেতার বাড়িতে আয়কর হানা, ১৯ ঘণ্টা তল্লাশি, মেল-মোবাইল হ্যাক করে লেনদেন, দাবি জয়দেবের
    বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, তুফানগঞ্জ: তুফানগঞ্জে তৃণমূলের শিক্ষক নেতার বাড়িতে আয়কর দপ্তরের হানা। ওই নেতার নাম জয়দেব আর্য। তাঁর বাড়ি তুফানগঞ্জের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টারপাড়ায়। বিষয়টি চাউর হতেই ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায় শহরজুড়ে। এলাকার কৌতূহলীরা তাঁর বাড়ির সামনে ভিড় জমাতে শুরু করেন। 

    জানা গিয়েছে, জয়দেববাবু তুফানগঞ্জের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের টাউন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। তিনি তুফানগঞ্জ ২ নম্বর চক্রের তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সেলের প্রাক্তন সভাপতি ছিলেন। সোমবার বিকেলে তাঁর বাড়িতে পৌঁছয় আয়কর দপ্তরের পাঁচ সদস্যের একটি দল। টানা ১৯ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। যদিও এ ব্যাপারে প্রশ্ন করলে বিষয়টি পুরোপুরি এড়িয়ে যান দপ্তরের আধিকারিকরা। 

    সম্প্রতি জয়দেবের মায়ের মৃত্যু হয়। তিনি তুফানগঞ্জ ২ ব্লকের হরিপুরের বাড়িতে ছিলেন। সোমবার আয়কর আধিকারিকরা প্রথমে তাঁর দাদার বাড়িতে যান। পরে পৌঁছন জয়দেবের মাস্টারপাড়া এলাকার বাড়িতে।

    জয়দেব বলেন, গত দু-আড়াই বছর ধরে আমার মোবাইলে একটি মেসেজ আসছে। প্রথমে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্ব দিইনি। এরপর সোমবার দুপুরে আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা বাড়িতে এলে জানতে পারি আমার মোবাইল এবং মেল হ্যাক করে প্রচুর টাকা আদানপ্রদান করা হয়েছে। সেই কারণেই আয়কর আধিকারিকেরা বাড়িতে এসেছিলেন। দীর্ঘ চেষ্টা চালিয়ে হ্যাকারদের হদিশও পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। শিক্ষক নেতার দাবি, আমি কোনও অবৈধ লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত নই। যদিও তদন্তের স্বার্থে আর কিছু জানাতে চাননি তিনি। 

    তবে, কী কারণে এত দীর্ঘ সময় ধরে অভিযান চালানো হল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। ওই এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, দীর্ঘ তল্লাশি সাধারণ কোনও ঘটনা নয়। এর পিছনে অন্য কিছুও থাকতে পারে। আয়কর হানা নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও বেশ চর্চা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে বিজেপির জেলা সহ সভাপতি উৎপল দাস বলেন, তৃণমূল সব জায়গাতেই দুর্নীতিগ্রস্ত, আয়কর হানা এটাই প্রমাণ করে। সিপিএম শহর এরিয়া কমিটির সম্পাদক অসীম সাহার কথায়, পুরোটাই তদন্ত সাপেক্ষ। নিশ্চয়ই আয়কর দপ্তরের কাছে বিশেষ কোনও তথ্য রয়েছে। তার ভিত্তিতে প্রায় ১৯ ঘণ্টা তাঁর বাড়িতে তদন্ত চলেছে।

    এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তুফানগঞ্জ পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার গৌতম সরকার। তিনি বলেন, আয়কর দপ্তরের আধিকারিকদের আসার কথা শুনে সেখানে যাই। তবে, কী কারণে হানা দিয়েছে, সে ব্যাপারে কোনও কিছুই সঠিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি।

    জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান রজত বর্মন বলেন, কোনও খবর এখনও পাইনি। তদন্ত চলছে। কেউ দোষী হলে শাস্তি পাবেন।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)