• ডুয়ার্সে গেরুয়া শিবিরের ভোটব্যাঙ্কে ধসের জের, চাপে পড়ে চা বাগান ইস্যুতে এবার দলের দুই এমপিকে নিয়ে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হচ্ছেন শমীক
    বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার: ডুয়ার্সের চা বলয়ে গত কয়েক বছর ধরে গেরুয়া শিবিরের ভোটব্যাঙ্কে ধস। সেইসঙ্গে চা বাগানে বিজেপির সংগঠন ছন্নছাড়া। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা ভোটের আগে চা বলয়ে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া চেষ্টা বিজেপির নয়া রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের। চাপে পড়ে আগামী সপ্তাহে দলের দুই সাংসদকে নিয়ে চা বাগান ইস্যুতে কেন্দ্রের দ্বারস্থ হচ্ছেন তিনি। দেখা করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে। মঙ্গলবার দলীয় কর্মসূচিতে ময়নাগুড়িতে যোগ দিতে এসে শমীক ভট্টাচার্য বলেন, উত্তরবঙ্গে চা বাগানের অবস্থা খুবই খারাপ। আগামী সপ্তাহে আমাদের জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের সাংসদকে নিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে দেখা করব। 

    এর আগে চা শ্রমিকদের সামাজিক কল্যাণের জন্য নির্মলা সীতারামন যে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করেছিলেন, তা কোথায় গেল? এই প্রশ্নের উত্তর দেননি বিজেপির রাজ্য সভাপতি। চা শ্রমিক ‘দরদি’ হিসেবে এদিন নানা কথা বললেও জলপাইগুড়ির বানারহাটে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থার চা বাগানগুলি কেন ধুঁকছে, তা নিয়ে শমীক ভট্টাচার্যের জবাব, কেন্দ্রীয় সরকার আর কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনস্থ সংস্থা বিষয়টি এক নয়। কোন বাগানের কী অবস্থা, সব তথ্য আমাদের কাছে আছে। সবটাই কেন্দ্রকে জানানো হবে। 

    তৃণমূলের দাবি, সম্প্রতি আলিপুরদুয়ারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এসে চা বাগান নিয়ে কোনও কথা বলেননি। সেজন্যই এবার চা শ্রমিকদের নিয়ে দিল্লিতে যাচ্ছে বিজেপি। 

    বিজেপি রাজ্য সভাপতির বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে পাল্টা তোপ দাগতে ছাড়েনি তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন। সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান নকুল সোনার বলেন, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিল্লিতে গিয়ে যেন কেন্দ্রের কাছে জানতে চান, নির্মলা সীতারামন চা শ্রমিকদের উন্নয়নে যে এক হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করেছিলেন, সেই টাকা কোথায় গেল? 

    এদিকে কোচবিহারে পা রেখেই শমীক নাম না করে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহকে আক্রমণ করেন। গুঞ্জবাড়িতে ঠাকুর পঞ্চানন কক্ষে জেলা সভাপতি অভিজিৎ বর্মন ছাড়াও প্রাক্তন জেলা সভাপতি সহ বিধায়করা উপস্থিত ছিলেন। তবে, বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অনন্ত মহারাজ আসেননি। তিনি অন্য কর্মসূচিতে বাইরে আছেন বলে দাবি করেছেন। 

    শমীক বলেন, এক নেতা দলবদল করে, পরিস্থিতির বাধ্যবাধকতায় তৃণমূলের কাছে আত্মসমর্পণ করে দিনহাটা থেকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। সেই নেতাকে প্রশ্ন করুন, আপনার বীরত্ব তো দিনহাটার মাটিতে পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে। যখন বাজেট পেশ হয়, তখন উত্তরবঙ্গের জন্য প্রি অ্যালোকেশন নামমাত্র থাকে, যা দিয়ে জল গরম হয় না। তখন আপনার এই কণ্ঠস্বর কোথায় থাকে?

    উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী বলেন, উনি একটু বোকা বোকা কথা বলে ফেলছেন। এরসঙ্গে বাজেটের সম্পর্ক কোথায় জানি না। বাজেট প্রত্যেকবার বাড়ছে। একবার আমার সঙ্গে বসে হিসেব করতে পারেন। 

    অনন্ত মহারাজ বলেন, আমার পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। সেখানে গিয়েছিলাম। কারও সঙ্গে দেখা করার জন্য আগ্রহী নই। আমার কাজ নিয়েই ব্যস্ত। 
  • Link to this news (বর্তমান)