নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: রাজনৈতিক শিষ্টাচার জলাঞ্জলি দিয়েছে। শুধুমাত্র হিংসা ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবসে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে এমন অভিযোগ করেন তৃণমূলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তথা শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। যদিও বিজেপি অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের পাল্টা বক্তব্য, নিজেদের প্রশাসনিক দুর্বলতা ঢাকতে এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে তৃণমূল।
২১ জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় সমাবেশে যোগ দেবেন শিলিগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ তৃণমূল নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা। যাঁরা যেতে পারবেন না, তাঁরা স্থানীয় এলাকায় শহিদদের স্মরণ করবেন। এই অবস্থায় ওই দিন রাজ্য সরকারের মিনি সচিবালয় ‘উত্তরকন্যা’ অভিযানের ডাক দিয়েছে পদ্ম শিবির। তারা সেই কর্মসূচির জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে পদ্ম শিবিরের বিরুদ্ধে সুর সপ্তমে তুলেছেন শিলিগুড়ির মেয়র। তিনি বলেন, আমাদের রাজ্যে কখনও কোনও রাজনৈতিক দল ব্রিগেড সমাবেশ করলে সেই সময় অন্য দল কোনও কর্মসূচি রাখে না। এটা রাজনৈতিক শিষ্টাচার। সেই শিষ্টাচার, রাজনৈতিক সৌজন্যতা জলাঞ্জলি দিয়ে আমাদের শহিদ দিবসে উত্তরকন্যা অভিযানের ডাক দিয়েছে বিজেপি। ওদের উদ্দেশ্য গোলমাল পাকানো। ওই দিন ফুলবাড়ি সহ গোটা উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় কর্মীরা শহিদ দিবস পালন করবেন। তাতে পদ্ম শিবিরের লোকরা ঢুকে বিশৃঙ্খলা ছড়াতে পারে।
এদিন শিলিগুড়ি শহর ও গ্রামের বেশকিছু জায়গায় শহিদ দিবস নিয়ে প্রচার অভিযান চালায় জোড়াফুল শিবির। সর্বত্র নেতৃত্ব দলের নেতা-কর্মীদের বিজেপির বিভাজনের রাজনীতি সম্পর্কে সতর্ক করেন। তৃণমূলের জেলা নেতারা বলেন, ১৮ জুলাই থেকেই কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মী সহ সমর্থকরা। বিভিন্ন কারণে যাঁরা কলকাতায় যেতে পারবেন না, তাঁরা স্থানীয় এলাকায় দলীয় পতাকা তুলে শহিদ স্মরণ করবেন। কিছু জায়গায় জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য শোনানো হবে।
বিজেপি অবশ্য মেয়রের তোলা অভিযোগ মানতে নারাজ। দলের শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলেন, তৃণমূলের শহিদ দিবসে কোনও অনুষ্ঠান করা যাবে না, এটা তো কোথাও উল্লেখ নেই। গৌতমবাবুর বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, বিজেপির কর্মসূচি নিয়ে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল। তাই নিজেদের প্রশাসনের দুর্বলতা ঢাকতে মেয়র আবোলতাবোল বকছেন। আর তৃণমূলের কাছ থেকে রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পাঠ নিতে হবে না, ওরা গোটা বাংলাকে রসাতলে পাঠিয়েছে।