• চাঁদা তুলেই গঙ্গার পাড়ে কাজের হুঙ্কার গ্রামবাসীর
    বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদদাতা, মানিকচক: মানিকচকের জোতপাট্টা গ্রামে গঙ্গার ব্যাপক ভাঙন। মঙ্গলবার সকাল থেকে নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভাঙন ভয়াবহ রূপ নেয়। প্রায় ৭০০ মিটার এলাকাজুড়ে লাগাতার নদীর পাড় ভাঙনে ঘুম উড়েছে স্থানীয়দের। ভাঙন রোধের জন্য বারবার আবেদন জানানো হলেও প্রশাসন কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। যার জেরে ভাঙন অব্যাহত। সেচদপ্তর কাজ শুরু না করলে নিজেরা চাঁদা তুলে মেরামত করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

    বাসিন্দাদের দাবি, এই ভাঙনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না মালদহ জেলা সেচদপ্তর। বর্ষার সময় প্রতিটি এলাকায় এই ধরনের ‘সামান্য’ ভাঙন হয়ে থাকে বলে তাদের দাবি। তাই ভয়ের কোনও বিষয় নেই। মালদহ জেলা সেচদপ্তরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শিবনাথ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, আমরা এলাকায় নজরদারি রেখেছি। পরিস্থিতি অনুযায়ী সঠিক সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

    ব্লকের জোতপাট্টা গ্রামে বাঁধ থেকে মেরেকেটে মাত্র ৭০ মিটার দূরে গঙ্গা নদী। বাঁধের ধারে রয়েছে জোতপাট্টা, রামনগর, কিশনটোলা, শিবনটোলা গ্রাম। প্রায় হাজারখানেক পরিবারের বাস এই নদীর তীরে। ভাঙনের জেরে একাধিকবার ভিটে বদল করতে হয়েছে তাঁদের। এখন এই বাঁধের ধারের জায়গাটুকু পরিবারগুলির সম্বল। তার মধ্যে কয়েকদিন ধরে আবার গঙ্গার পাড় ভাঙন শুরু হয়েছে। তবে, মঙ্গলবার সকাল থেকে লাগাতার বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় নদীর প্রবল জলোচ্ছ্বাসে ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। রামনগর থেকে জোতপাট্টা পর্যন্ত প্রায় ৭০০ মিটার এলাকাজুড়ে ভাঙন হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ মণ্ডল বলেন, ভাঙনের বিষয়টি গত কয়েকবছর ধরে সেচদপ্তর ও প্রশাসনকে জানিয়ে আসছি। কিন্তু, তারা উদাসীন। কোনও পদক্ষেপ করেনি। দু’বছরে প্রায় ২৫০ মিটার জমি নদীগর্ভে তলিয়েছে। এখন বাঁধ থেকে নদীর দূরত্ব মাত্র ৭০ মিটার। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আর অস্তিত্ব থাকবে না। কিশনটোলার বাসিন্দা সুনীতা মণ্ডলের বাড়ির গা ঘেঁষে গঙ্গার ভাঙন হচ্ছে। ইতিমধ্যে তাঁর বাড়ির অর্ধেক অংশ নদীতে তলিয়েছে। সুনীতা বলেন, ১৫ বছর আগে এখানে পাথর বেঁধে ভাঙন রোধের কাজ হয়েছিল। সেজন্য দীর্ঘদিন রক্ষা পেয়েছিলাম। সেই বাঁধ পরে নদীতে তলিয়েছে। তারপর আর নতুন করে কাজ হয়নি। এর আগে তিনবার ভাঙনে বাড়ি বদলেছি। এবার কোথায় যাব, জানি না। পাড় ভাঙন রুখতে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করছি। বরুণচন্দ্র মণ্ডল নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ভূতনিতে গোপালপুরে হচ্ছে, তাহলে আমাদের গ্রামে ভাঙন রোধে কাজ হবে না কেন? এখানে তৃণমূলের পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে। তারাও  উদ্যোগ নিচ্ছে না। আমরা দু’দিন অপেক্ষা করব। তারমধ্যে রাজ্য সরকার বা প্রশাসন ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না নিলে নিজেরাই চাঁদা তুলে কাজ করব।
  • Link to this news (বর্তমান)