সংবাদদাতা, কাঁথি: খেজুরি থানার পশ্চিম ভাঙনমারি গ্রামে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যুর প্রতিবাদে ডাকা বন্ধের দিন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে আটজন বিজেপি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। ধৃতদের মধ্যে খেজুরির বিজেপি পরিচালিত কামারদা পঞ্চায়েতের উপপ্রধানও রয়েছেন। এদিকে ঘটনাপ্রবাহের জেরে থমথমে রয়েছে খেজুরি। এই পরিস্থিতির মধ্যেই আজ, বুধবার জনকায় মিছিল ও সভার ডাক দিয়েছে তৃণমূল। প্রসঙ্গত, বিজেপির পক্ষ থেকে সোমবার খেজুরি বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল।
এইদিন দুপুর ২ টো ৩০ মিনিটে খেজুরি-২ ব্লক তৃণমূলের ডাকে এই মিছিল জনকা দুর্গামন্দির প্রাঙ্গণ থেকে কলমোড় পর্যন্ত পরিক্রমা করবে। তারপর বিদ্যাপীঠ মোড়ে সভা হবে। দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে বন্ধের নামে বিজেপির তাণ্ডব ও সাম্প্রদায়িক অপপ্রচারের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে ব্লক তৃণমূল সভাপতি সমুদ্ভব দাস জানান। এদিকে পুলিস জানিয়েছে, ধৃতরা হল খেজুরির জাহানাবাদ গ্রামের সুরজিৎ পাকিরা, কণ্ঠিবাড়ির সুশান্তকুমার মাইতি, বাঁশগোড়ার সমীরণ প্রধান (উপপ্রধান) ও কামারদা গ্রামের গুরুপদ আচার্য, চিন্ময়কুমার মালিক, সত্যরঞ্জন মাল, বিশ্বরঞ্জন মাল ও ভোলানাথ ধাউড়িয়া। এদের মধ্যে কয়েকজন দলের বিভিন্ন পদে রয়েছেন। মঙ্গলবার এদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক জামিন নাকচ করে আগামী ২২ জুলাই পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার পশ্চিম ভাঙনমারি গ্রামে ডান্স হাঙ্গামা চলাকালীন বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়। বিজেপির পক্ষ থেকে তাঁদের পিটিয়ে মারা হয়েছে বলে দাবি করা হয়। এই ঘটনায় দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে সোমবার খেজুরি বন্ধের ডাক দেয় পদ্ম শিবির। এমনকী, বন্ধের সমর্থনে মিছিল করেন বিরোধী দলনেতা। যদিও ওইদিন কাঁথির অতিরিক্ত পুলিস সুপার(গ্রামীণ) শুভেন্দ্র কুমার জানিয়ে দেন, ময়নাতদন্তে পরিষ্কার হয়েছে, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েই ওই দু’জনের মৃত্যু হয়।
বন্ধ চলাকালীন বিজেপির নেতা-কর্মীরা বাঁশগোড়ায় হেঁড়িয়া-বোগা সড়কে কাঠ ফেলে অবরোধ শুরু করেন। পুলিস অবরোধ তুলতে গেলে সমর্থনকারীদের সঙ্গে পুলিসের বচসা ও ধস্তাধস্তি হয়। একটি পণ্যবাহী লরি থামিয়ে পাথর ছুড়ে কাচ ভেঙে দেওয়ার অভিযোগও ওঠে।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বলেন, একটি দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ধর্মীয় রং লাগিয়ে খেজুরিতে অশান্তি করতে চাইছিল বিজেপি। আজকের সভায় ব্যাপক ভিড় হবে।
খেজুরির বিজেপি বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক বলেন, মিথ্যা অভিযোগে আমাদের আট নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।