সংবাদদাতা, কান্দি: আশঙ্কাকে সত্যি প্রমাণ করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণীর বাঁধ উপচে জল ঢুকল খড়গ্রাম ব্লকের একাধিক গ্রামে। আতঙ্কিত বাসিন্দারা দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরে যেতে শুরু করেছেন। ইতমধ্যে খড়গ্রাম ব্লকের কেলাই, যাদবপুর, দীঘা, হাজিপুর, পোড়াডাঙা, সিয়াটা, কামারপুকুর মৌজার মতো নিচু এলাকাগুলোতে জল ঢুকতে শুরু করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। ওই এলাকায় ব্লক প্রশাসনের একটি টিম পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রশাসন অগ্রিম সতর্কতা প্রচার শুরু করেছিল। ব্রাহ্মণী নদীর জলস্তর বাড়তে শুরু করেছিল। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ দেউচা ব্যারেজ থেকে ২২ হাজার ৩৮৭ কিউসেক জল ছাড়ায় নদী দু’ কূল ছাপিয়ে বইতে শুরু করে। এমন অবস্থায় খড়গ্রাম ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাসিন্দাদের সতর্ক করতে মাইকিং করা হয়। বিশেষ করে স্থানীয় ঝিল্লি পঞ্চায়েতের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সতর্কতা হিসেবে ব্লক চত্বরে একটি কন্ট্রোলরুমও খোলা হয়। খড়গ্রামের বিডিও মিলনী দাস জানিয়েছিলেন, এদিন বিকেল নাগাদ ব্রাহ্মণী নদীর সাঁকোঘাট এলাকায় জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করবে। তাই নদীর সীমানা লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার সাত সকালে ওই পঞ্চায়েতের ভুষকুল, টিঠিডাঙা, যাদবপুর, নামু যাদবপুর, পোড়াডাঙা ও বাজিতপুর গ্রামে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়। বলা হয়, ব্রাহ্মণী নদীর জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে হবে। পাশাপাশি আগাম সতর্কতা হিসেবে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অন্যান্য সামগ্রী নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে। প্রশাসন সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
এই মাইকিংয়ের পরই বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল। নিচু এলাকার বাসিন্দারা বাড়ি ছেড়ে উঁচু জায়গায় সামগ্রী সরিয়ে নিতে শুরু করেন। গবাদি পশুগুলিকে উঁচু জায়গায় বেঁধে আসেন। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুধু প্রশাসনই নয়, গ্রামের মসজিদগুলি থেকেও মাইকিং করে তাঁদের সাবধানে থাকতে বলা হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দা আনারুল মোল্লা বলেন, এদিন সকাল থেকেই ব্রাহ্মণী যেভাবে ফুঁসতে শুরু করেছে তাতে বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। নামু যাদবপুরের একটি দুর্বল বাঁধের কাছে বাসিন্দারা সজাগ দৃষ্টি রাখছিলেন। সেখানে বাঁধ ভেঙে গেলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে।
ঝিল্লি পঞ্চায়েতের প্রধান শরিফা বিবি বলেন, ব্লক প্রশাসনের থেকে সতর্কবার্তা পাওয়ার পরেই সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্যকে বিষয়টি অবগত করে নিজের নিজের এলাকায় বাসিন্দাদের সতর্ক করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে ফ্লাড শেল্টার খুলে দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। প্রত্যেক পঞ্চায়েত সদস্য পর্যাপ্ত পরিমাণে মাটি ও বালির বস্তা মজুত করা শুরু করেছেন।