সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর অভিষেক। ওপার বাংলায় সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভাঙায় গর্জে উঠলেন তৃণমূল সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্ব ভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলাদেশে ইউনুস সরকারের সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে তাঁর পোস্ট, ঐতিহ্যশালী এই বাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া বাঙালির ঐতিহ্যের উপর আঘাত। বাঙালির আবেগে আঘাত। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন।
এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে অভিষেক লেখেন, ‘অস্কারজয়ী চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাসভবনটি বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ ভেঙে ফেলছে। এই ঘটনায় আমি অত্যন্ত মর্মাহত। ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে তাৎপর্যপূর্ণ এই বাড়িটিকে ভেঙে ফেলা আমাদের ঐতিহ্যের উপর আক্রমণের চেয়ে কম কিছু নয়। বাঙালিদের বিবেকের উপর আঘাতও বটে। শিল্পক্ষেত্রে রায় পরিবারের অবদানকেও অবজ্ঞা করা হচ্ছে।’ বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি ভারত সরকারকেও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিষেক।
I am deeply distressed to learn that the ancestral home of Oscar-winning filmmaker Satyajit Ray in Dhaka is reportedly being demolished by the Bangladeshi authorities. This century-old property belonged to Ray’s grandfather, Upendrakishore Ray Chowdhury, a towering figure in…
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) July 16, 2025
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের আইনজীবী ছিলেন হরিকিশোর রায়। পরবর্তী কালে তিনি প্রচুর সম্পত্তির মালিক হন। পান রায়চৌধুরী উপাধি। হরিকিশোর প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর পালক পিতা। উপন্দ্রেকিশোর এই বাড়িতে দীর্ঘদিন কাটিয়েছেন। সেই স্মৃতিবিজড়িত বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। সেখানে বহুতল বানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
১৯৮৯ সাল থেকে দেড়শোর বেশি বছর পুরনো এই বাড়িটি বাংলাদেশ শিশু অ্যাকাদেমির ভবন হিসাবে ব্যবহার করা হত। কিন্তু ২০০৭ সাল থেকে নিরাপত্তার কারণে সেই বাড়িটি থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় শিশু অ্যাকাদেমি। সম্প্রতি সেটি ভেঙে বহুতল নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভেঙে ফেলা হয় অনেকাংশ। এরপরই প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের শশীলজ জাদুঘরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বাড়িটি ভাঙা সম্পর্কে তথ্য চেয়ে জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার বিষয়টি সামনে এনে এক্সে পোস্ট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি লেখেন, ‘আমি বাংলাদেশ সরকার ও ওই দেশের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষের কাছে আবেদন করব, এই ঐতিহ্যশালী বাড়িটিকে রক্ষা করার জন্য। ভারত সরকার বিষয়টিতে নজর দিক।’এরপরই নড়েচড়ে বসে নয়াদিল্লি। বাংলাদেশে সত্যজিৎ রায়ের পৈতৃক বাড়ি ভাঙা নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বিবৃতি দেয় ভারত সরকার। ইউনুস সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হল, বাংলা সাহিত্য এবং সংস্কৃতি-বিনোদন জগতের এ হেন পীঠস্থানকে রক্ষা না করা হলে সেটা ভালোভাবে নেবে না ভারত সরকার।