• বাংলা বলায় রাজবংশী, মতুয়াদেরও ‘পুশব্যাক’, বাঙালি অস্মিতায় শান দিয়ে মমতা বললেন, ‘খেলা হবে’
    প্রতিদিন | ১৬ জুলাই ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাভাষী হওয়ার অপরাধে ভিনরাজ্যে শুধু মুসলিমদের আক্রান্ত হতে হচ্ছে, এ ধারণা ভ্রান্ত। ভিনরাজ্যে আক্রান্ত হিন্দু বাঙালিরাও! পুশব্যাক করা হচ্ছে মতুয়া-রাজবংশীদেরও! ধর্মতলার সভা থেকে বাঙালি অস্মিতায় শান দিয়ে কেন্দ্র তথা বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ধর্মতলার মঞ্চ থেকেই তাঁর হুঙ্কার, ‘খেলা হবে।’

    স্রেফ বাংলা বলার অপরাধে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে বাংলাভাষীদের। কোথাও ধরপাকড়, কোথাও বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া, কোথাও কর্মক্ষেত্রে হেনস্তা। অন্তত রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের এমনটাই অভিযোগ। বিজেপির কোনও কোনও মহল থেকে প্রচার করা হচ্ছে, ভিনরাজ্যে যারা আক্রান্ত হচ্ছেন বলে অভিযোগ, তারা রোহিঙ্গা মুসলমান। হিন্দু বাঙালিরা ভিনরাজ্যে নিরাপদ এবং সুরক্ষিত। কিন্তু ধর্মতলার সভা থেকে সেই ‘ভুল’ ভাঙিয়ে দিলেন মমতা। তৃণমূল নেত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, শুধু মুসলিমদের নয়, বাংলা কথা বলার অপরাধে ‘পুশব্যাক’ করা হচ্ছে হিন্দুদেরও। তৃণমূল উদাহরণ হিসাবে বলছে, সম্প্রতি শান্তনু ঠাকুর এবং সুকান্ত মজুমদারের সই সম্বলিত নথি নিয়েও দিল্লিতে মতুয়াদের অত্যাচারিত হতে হয়েছে। তাদের বাংলাদেশি বলে দেগে দেওয়া হয়েছে। 

    ধর্মতলার সভায় মমতা বললেন, “ওরা বলেছে বাংলায় কথা বললেই অ্যারেস্ট করুন। আমরা সব ভাষাকে সম্মান করি। যারা ভারতের নাগরিক তাঁদের সকলকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু বাঙালির অপমান মানব না। অত্যাচার সহ্য করা হবে না। জমিদারি নাকি? বাংলা বললেই বাংলাদেশি রোহিঙ্গা বলবেন? কত রাজবংশীকে পুশব্যাক করেছেন? মতুয়াদের কেন অত্যাচার করা হচ্ছে? রাজবংশীরা হিন্দু নন? মতুয়ারা হিন্দু নন?” সম্প্রতি কোচবিহারের এক বাসিন্দাকে এনআরসি নোটিস পাঠিয়েছে অসম সরকার। মমতার প্রশ্ন, “অসম সরকার কোন অধিকারে নোটিস পাঠায়? অসমে ১২ লক্ষ হিন্দু বাঙালি ডিটেনশন ক্যাম্পে কেন?”

    বস্তুত, এদিনের সভায় আলাদা করে মতুয়া-রাজবংশীদের কথা উল্লেখ করে তোপ দাগাটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। ২০১৪ সালের পর রাজ্যে বিজেপি যেটুকু বৃদ্ধি পেয়েছে তার মূল ভিত্তি এবং রাজবংশী এবং মতুয়ারাই। একুশের বিধানসভা এবং চব্বিশের লোকসভায় বিজেপির চরম শক্তিক্ষয়ের মধ্যেও মতুয়া এবং রাজবংশী গড় একপ্রকার অটুট রয়েছে। কিন্তু বুধবারের সভায় মমতা বুঝিয়ে দিতে চাইলেন, বিজেপি ক্ষমতায় এলে রাজবংশী এবং মতুয়ারাও নিরাপদে থাকতে পারবেন না।
  • Link to this news (প্রতিদিন)